ফরমায়েশি রায় ঘোষণার চক্রান্ত চলছে: রিজভী

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :: আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যে প্রমাণ হয় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়কে প্রভাবিত করে ফরমায়েশি রায় ঘোষণার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

আজ শনিবার (২৫ আগস্ট) সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। আগামী মাসে এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে এবং বিএনপি নতুন করে সংকটে পড়বে ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য নীল নকশার অংশ বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী অভিযোগ করেন, এক-এগারোর সরকারের আমলে প্রথম অভিযোগপত্রে বিএনপি কিংবা তারেক রহমানের নাম ছিল না। তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দের দেওয়া অভিযোপত্রে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তারেক রহমানকে জড়ানো হয়েছে। তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইকে আওয়ামী লীগ তদন্তে সহযোগিতা করেনি।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হয় একুশে আগস্টের রায়কে প্রভাবিত করার জন্য তাঁরা উঠে পড়ে লেগেছেন। একুশে আগস্ট বোমা হামলা মামলার রায় নিজেরা লিখে তা আদালতকে দিয়ে বাস্তবায়ন করাবেন কি না মানুষের মনে সে সংশয়ও এখন দেখা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য শুনে মনে হয় একটি ফরমায়েশি রায় হতে যাচ্ছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব গতকাল বলেছেন, একুশে আগস্ট মামলার রায় হলে সংকটে পড়বে বিএনপি এবং আগামী সেপ্টেম্বরে সে রায় হবে। কাদের সাহেবর বক্তব্যেই পরিষ্কার যে তাঁরা নীল নকশা অনুযায়ী একুশে আগস্টের বোমা হামলা মামলার রায় নিয়ে আগাম কাজ করছেন এবং সেজন্য একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কূটচাল চালছেন তাঁরা।’

রিজভী বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই দেখছি আওয়ামী লীগ একুশে আগস্ট বোমা হামলা মামলা নিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি করছে। তাদের আন্দোলনের ফসল মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সময়ও এ মামলার অভিযোগপত্র বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ছিল না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের দলীয় লোক কাহার আকন্দকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়। তার আগেই কাহার আকন্দ পুলিশ ডিপার্টমেন্ট থেকে অবসরে গিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন, এমনকি ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। রাজনৈতিকউদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাঁকে পুলিশ বিভাগে ফের নিয়োগ দিয়ে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা করা হয় ২০০৯ সালে। দলীয় চেতনার তদন্ত কর্মকর্তা কাহার আকন্দকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যই ছিল এ মামলায় তারেক রহমানকে জড়ানো।’ তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালে এক-এগারোর সময় ১৬৪ ধারায় মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে তারেক রহমানের নাম ছিল না। শুধু এ মামলায় তারেক রহমানের নাম বলানোর জন্য অন্য মামলায় ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানসিক ও নির্মম নির্যাতন করা হয় মুফতি হান্নানকে। পৃথিবীর কোনো দেশেই এ ধরনের নজির নেই। ৪১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে অমানসিক নির্যাতন করে মুফতি হান্নানকে দিয়ে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম বলতে ও তথাকথিত স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করেন কাহার আকন্দ, যার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’

বিএনপি নেত বলেন, মুফতি হান্নানের ওপর নির্যাতন চালিয়ে তারেক রহমানকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসানোর জন্য পুরস্কারস্বরূপ কাহার আকন্দের বার বার পদোন্নতিসহ চাকরির মেয়াদ বেড়েছে।

বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘২০০৮ সালের ১১ জুন বর্তমান আইজিপি ও তৎকালীন সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি জাবেদ পাটোয়ারির তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালায় হরকাতুল জিহাদ, মুফতি হান্নানই পরিকল্পনাকারী, মওলানা তাজউদ্দিন গ্রেনেড সরবরাহকারী, হামলার পরিকল্পনা হয় ১৯ আগস্ট। জাবেদ পাটোয়ারীর তদন্ত প্রতিবেদনে কোথাও তারেক রহমান বা বিএনপির নাম নেই। যা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.