মুক্তিযোদ্ধা রমা চৌধুরী আইসিইউতে
সিটি নিউজ ডেস্ক :: বরেণ্য সাহিত্যিক মুক্তিযোদ্ধা রমা চৌধুরীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হামপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলের দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন। তিনি চমেক হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সাহিত্যিক রমা চৌধুরীর বইয়ের প্রকাশক ও তার দেখাশুনায় নিয়োজিত আলাউদ্দিন খোকন বলেন, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর পড়ে গিয়ে কোমরে ফ্রাকচার হয় অসুস্থ রমা চৌধুরীর। সেদিনই তাকে মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
১৭ জানুয়ারি তাকে ভর্তি করা হয় চমেক হাসপাতালে। চমেক হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলে ২৬ মার্চ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালীতে। গ্রামে নেয়ার পর রক্তবমি হলে ফের তাকে ভর্তি করা হয় চমেক হাসপাতালে। সেই থেকে তিনি সেখানেই আছেন। গতকাল শনিবার বিকেলের দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করেন।
২০১৩ সালের ২৭ জুলাই এই বীরাঙ্গনাকে গণভবনে ডেকে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বীরঙ্গনার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তার কি প্রয়োজন? উত্তরে রমা শুধু বলেছিলেন- ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে শুধু আমার মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করে দেন। আমার আর কিছু প্রয়োজন নেই।’ জীবনে কখনো কোনো আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেননি রমা চৌধুরী।
১৯৪১ সালে বোয়ালখালীর পোপাদিয়া গ্রামে রমা চৌধুরীর জন্ম। ষাটের দশকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স করা রমা দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রথম নারী স্নাতকোত্তর (এমএ)। একাত্তরের ১৩ মে ভোরে নিজ বাড়িতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসরদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন রমা চৌধুরী। সম্ভ্রম হারানো রমা চৌধুরী সংগ্রাম করে জীবন কাটিয়েছেন বীর দর্পে। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে হারিয়েছেন তিন ছেলে। সন্তান হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আর সীমাহীন দারিদ্র্যতা সঙ্গী করে কেটেছে তার সংগ্রামী জীবন। দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন শেষে লেখালেখিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা মিলিয়ে এ পর্যন্ত তিনি ১৯টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।