ছেলের পাশে সমাহিত হলেন বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরী

0

বোয়ালখালী প্রতিনিধি:: দীপংকর টুনুর সমাধির পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ‘একাত্তরের জননী’ খ্যাত বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরী।
৩ সেপ্টেম্বর সোমবার ভোর ৪টা ৪০মিনিটের সময় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।

এরপর সকাল ১০টায় দিকে নগরীর শহীদ মিনার চত্বরে, দুপুর ১টার দিকে বোয়ালখালী উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে ও পোপাদিয়ার গ্রামের বাড়িতে রমা চৌধুরীকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এছাড়া নগরীতে বেলা সোয়া ১২টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ও বোয়ালখালী উপজেলার পোপাদিয়ায় দুপুর ৩টার দিকে রমা চৌধুরীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রমা চৌধুরীর শেষ ইচ্ছানুযায়ী ধর্মীয় রীতি অনুসারে ছেলে দীপংকর টুনুর সমাধি পাশে চিরনিদ্রায় সমাহিত করা হয় এ সংগ্রামী বীরঙ্গনাকে।
এ সময় ‘একাত্তরের জননী’ খ্যাত বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর বেঁচে থাকা একমাত্র ছেলে জহর চৌধুরী, রমা চৌধুরীর দীর্ঘদিনের সহচর ও তার বইয়ের প্রকাশক আলাউদ্দীন খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আলাউদ্দীন খোকন বলেন, গত রোববার (০২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে রমা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। রাতেই তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো চেষ্টাই কাজে আসেনি। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
১৯৩৬ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন রমা চৌধুরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। চার ছেলে সাগর, টগর, জহর এবং দীপংকরকে নিয়ে ছিল তাঁর সংসার।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে সম্ভ্রম হারান রমা চৌধুরী। পুড়িয়ে দেওয়া হয় মাথা গোঁজার ঠাঁই। একে একে হারান তিন ছেলেকে। তবু জীবনযুদ্ধে হার মানেননি এ বীরাঙ্গনা। ‘একাত্তরের জননী’, ‘এক হাজার এক দিন যাপনের পদ্য’ এবং ‘ভাব বৈচিত্রে রবীন্দ্রনাথ’ সহ ১৮টি গ্রন্থ রচনা করেন তিনি। এসব বই বিক্রি করেই চলতো তার সংসার। এছাড়া শিক্ষকতা পেশায়ও জড়িত ছিলেন তিনি। ব্যক্তি জীবনে তাঁর চাওয়া পাওয়া না থাকলেও তিনি ব্যক্ত করেছিলেন নিজ বাড়িতে অনাথ আশ্রম গড়ার।
রমা চৌধুরী চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.