কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের চার লেইনের কাজ ডিসেম্বরে শুরু

0

শহিদুল ইসলাম,উখিয়া(কক্সবাজার): দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শহীদ এটিএম জাফর আলম আরকান সড়ক এবার চার লেইনে উন্নীত হতে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট পরবর্তী পার্শ্ববর্তী মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার কারণে প্রায় ১২ লাখ বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়। বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্টি আশ্রয়কে কেন্দ্র করে দিন দিন আন্তর্জান্তিক অঙ্গনের প্রতিনিধিদের হাজার হাজার গাড়ীর যাতায়াত বেড়ে গেছে এই সড়ক দিয়ে।

এছাড়াও প্রতিদিন রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক দেশি-বিদেশী এনজিও’র গাড়ীসহ সীমান্ত শহর টেকনাফ স্থল বন্দরে আসা-যাওয়া করছে আমদানি-রপ্তানী পণ্যের ভারী যানবাহন। এক লেইনের এই সড়ক দিয়ে হাজারো গাড়ী যাতায়াতের কারণে পুরো সড়কটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা সড়কের পাশে বাজার সমূহে দীর্ঘ ৪/৫ কি:মি: লম্বা যানজট লেগে থাকে। এতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনসাধারণ ও যাত্রী সাধারণকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জীর্ণ এই সড়কে দূর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটছে প্রতিনিয়ত।

বাংলাদেশ-মিয়ানমার-চীন মৈত্রী সড়কে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হিসেবেও এই সড়কটির গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃটিশ সরকারের আমলে বাস্তবায়িত লিংক রোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এই সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ কি:মি: দূরত্বের সড়কটি চার লেইনে উন্নীত করণের প্রকল্প হাতে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও উখিয়া উপজেলা সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো বলেন, আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য দেশি-বিদেশী এনজিও’র গাড়ীর ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেহাল দশা হয়েছে। সড়কটি চার লেইনে উন্নীত করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তবে সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। তবে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানান তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ এটিএম জাফর আলমের ছোট ভাই উখিয়ার হলদিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, সড়কটির উভয় পাশে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্ধারিত জায়গা এক শ্রেণির প্রভাবশালী জবরদখলকারী ও মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা দীর্ঘ বৎসর ধরে সড়কের জায়গার উপর বিভিন্ন স্থাপনা, মার্কেট, দোকান ঘর, পুকুর ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছে। যার কারণে সড়কটি দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে। ফলে অবাধে যানচলাচল ও পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

শাহ আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ উখিয়া-টেকনাফের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কটি দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি চার লেইনে উন্নীত করণ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কক্সবাজারের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, চলতি মাসের ২৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের চার লেইনের কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পে ৩টি প্যাকেজে কাজ চলবে। প্রাক্কলিত ব্যয় সম্পর্কে তিনি বলেন যেহেতু টেন্ডার হয়নি সেহেতু প্রাক্কলিত ব্যয় কত নির্ধারণ করা হয়েছে তা বলা সম্ভব হচ্ছে না।

উখিয়ার সহকারী কমিশনার (ভুমি) একরামুল ছিদ্দিক বলেন, রোহিঙ্গা আসায় উখিয়া ও টেকনাফের মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে বনাঞ্চল ধ্বংস, রাস্তা ঘাট নষ্ট, জনচলাচল বিঘ্ন ঘটছে। তাই কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কটি চার লেইন করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করি এই প্রকল্পের কাজ অতি দ্রুত শুরু হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.