প্রযুক্তি দিয়েই রোধ করতে হবে প্রযুক্তির অপব্যবহার

0

অর্থ ও বাণিজ্য, সিটি নিউজ :: বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে অর্থ পাচারের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। উন্নত প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে দেশের টাকা চোরাচালান হয়ে যাচ্ছে বিদেশে। প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা অর্জনের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানও প্রযুক্তি দিয়েই করতে হবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় অর্থ পাচার বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব কথা উঠে এসেছে।

বুধবার (১০ অক্টোবর ) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘মানিলন্ডারিং ভালনারেবিলিটিস ইন নিউ পেমেন্ট সিস্টেমস: বাংলাদেশ কনটেক্সট’ শীর্ষক কর্মশালায় এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ বলেন, প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে সমাজ ব্যবস্থা অনেক এগিয়ে গিয়েছে। বর্তমান সময়কালে দেখা যায় অধিকাংশ লেনদেন পুরোপুরি বায়বীয় মাধ্যমে হচ্ছে। এখানে সামনা সামনি কারও সাথে দেখা হওয়ার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে অর্থ পাচারের ঝুঁকিটা অনেক বেশি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের সকলকে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে সচেতন হবার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমে গতি বাড়লেও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা চালু হয়নি। এটা রোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দোহাই দিলে হবে না সচেতনতা বাড়াতে হবে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, পুরো ব্যাংকিং ব্যবস্থা আইটি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে শুধু আইটি অফিসারদের নয় পুরো ব্যাংকিং খাতের কর্মীদের আইটি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।

বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও জনশক্তি নেই। এদিকে নজর দিয়ে ব্যাংকারদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, আইন করার সময় ব্যাংকিং অপারেশনে কোন ক্ষতি না হয় সেদিকটি বিবেচনায় রাখতে হবে। সুতরাং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে নিতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।

সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. এম মাঈনুদ্দিন চৌধুরী বলেন, মানব সম্পদকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি এনবিআর, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, নিবার্চন কমিশন, আইসিটি মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক লিলা রশীদ বলেন, মোট লেনদেনের ৬ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে হয়। সাম্প্রতিক এ ধরণের ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আরও নিয়ম শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কিছুটা সময় লাগবে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করলে দ্রুত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

এনবিআরের প্রথম সচিব সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে সময় নেই। এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিষয়ে আরও সচেতন এবং সচেষ্ট হতে হবে।

কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক (ট্রেনিং) ড.শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক অন্তরা জেরীন, বিআইবিএমের প্রভাষক মো: ফয়সাল হাসান, এনবিআরের প্রথম সচিব সৈয়দ মুশফিকুর রহমান, বিকাশ লিমিটেডের চীফ এক্সটারনাল অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফায়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল(অব.) শেখ মো: মনিরুল ইসলাম, ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এফএভিপি জাহিদ মনসুর।

এছাড়া আরও ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রব, খোন্দকার আলী কামরান আল জাহিদ, প্রদীপ পাল এবং মো: রশিদ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.