চট্টগ্রামে গণপরিবহন-ফুটপাতে অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন

0

নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটি নিউজ :  চট্টগ্রামে বর্তমান গণপরিবহন ও ফুটপাতে চরম অব্যবস্থাপনা আর নগর উন্নয়নে যে কাজগুলো হচ্ছে তা অপরিকল্পিত। নগরবাসির বড় অংশের ব্যবহৃত গণপরিবহন ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা না এনে গুটিকয়েক মানুষের জন্য বড় প্রকল্প গ্রহণ করে অসম উন্নয়ন এবং অর্থের অপচয় করছে সিডিএ। এটা চলতে থাকলে বাড়বে দীর্ঘমেয়াদী জটিলতা।

সোমবার (১৫ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নগর যাতায়াতে পথচারী ও গণপরিবহনে অগ্রাধিকার-প্রেক্ষিত চট্টগ্রাম সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান নগরবিদ ও সচেতন নাগরিকদের সংগঠন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম।

নগর ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ও কাঙ্খিত উন্নয়নে অনেকদিন ধরে ধারাবাহিক পরামর্শ দিয়ে আসছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর যানজট নিরসনে লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত উড়াল সড়ক নির্মাণের বিরোধিতা করছে সংগঠনটি।

উল্লেখ্য,সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি গত ১০ অক্টোবর ‘লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ নির্মাণ সংক্রান্ত ব্যয় অনুমোদন করেছে। শহরের মূল অংশ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত সহজতর করতে নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

সংগঠনের সভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন,‘যত মেগাপ্রকল্প নেওয়া হয়, কিছু গ্রুপ থাকে, যিনি সংস্থার প্রধান থাকেন তার গ্রুপ থাকে, তারা সেখানে ব্যবসা করতে পারেন, তারা টাকা আয় করেন। কিন্তু এই টাকা তো আমাদের সবার টাকা। জনগণের টাকা। আমাদের টাকা খরচ করে আমাদের রাস্তায় হাঁটার অধিকার কেড়ে নেবেন, এটা তো মেনে নেওয়া যাবে না।’

সংগঠনের সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে সড়কের যে সক্ষমতা আছে, অব্যবস্থাপনার জন্য সেটার শতভাগ ব্যবহার হচ্ছে না। সঠিক বিকল্প বিবেচনা না করে মাত্র ২০০ জন শিল্পদ্যোক্তার বা সিআইপি-ভিআইপির জন্য ২৮০০ কোটি টাকার এক্সপ্রেসওয়ে কি সমর্থন করা যায়? এই সিআইপি-ভিআইপিরা মোট জনসংখ্যার কতজন? শূন্য দশমিক ০০৩৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যন অনুযায়ী দৈনিক বিমানযাত্রী ৩৪৭২ জন। সেটা বিবেচনা করলেও এই বিনিয়োগ যৌক্তিক নয়।’

আরো জানান, এই নগরীতে ৮৩ শতাংশ মানুষেরই ব্যক্তিগত গাড়ি নেই। তাদের জন্য গণপরিবহন ব্যবস্থাপনাকে শৃঙ্খলায় না এনে গুটিকয়েক মানুষের সুবিধার্থে উড়ালসেতু বা এক্সপ্রেসওয়ে করাকে ত্রুটিপূর্ণ উন্নয়ন হিসেবে অভিহিত করেন বিশেষজ্ঞরা।বর্তমানে সত্তুর শতাংশ নগরবাসীকে ফূটপাত ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু নগরীর প্রায় শতভাগ ফুটপাতই চলাচলের অযোগ্য।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. সেকান্দর খান, সুভাষ বড়ুয়া, এম এ বাসেত ও বিধান বড়ুয়া এবং সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, শাহরিয়ার খালেদ ও তাসলিমা মুন ছিলেন।চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বর্তমান কর্মকান্ডকে অপরিকল্পিত দাবি করে বিশ্বমানের নগরী গড়তে বিজ্ঞান ও সমতাভিত্তিক উন্নয়নের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.