নির্বাচন নিয়ে সুশীল সমাজের একটি মহল ষড়যন্ত্র করছেঃ মেয়র

0

কারেন্ট টাইমসঃ সাড়ম্বরে সিটি কর্পোরেশন চত্বরে শুরু হয়েছে দু’দিন ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব ২০১৮। আজ বিকালে এ অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব উদযাপন পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বেলুন উড়িয়ে দু’দিন ব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

উদ্বোধনকালে সিটি মেয়র বলেন, ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের জন্য আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ। এ মুক্তিযুদ্ধে আমরা যদি বিজয়ী না হই তাহলে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে। আমাদের বিজয়ে এদেশের সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংস্কৃতিকর্মীরা অগ্রবর্তী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রাক্ মুহূর্তে তারা সে ভূমিকা নিষ্ঠার সাথে পালন করলে আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌছে যাব। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর বুকে উন্নয়নশীল দেশের একটি মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে প্রতিস্থাপিত হয়েছে। একদিন এদেশকে যারা তলাবিহীন ঝুঁড়ি অভিহিত করেছিল সে দেশের সাবেক রাষ্ট্রপ্রধান বারাক ওবামা বাংলাদেশের উন্নয়নের পথযাত্রাকে অন্যান্য উন্নয়নকামী দেশকে অনুসরণ করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ উন্নয়নের মডেলকে ধ্বংস করার জন্য বাংলাদেশ বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করতে চাই।

শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় সকল দলের অংশগ্রহণমূলক একটি সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে। এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য গণতন্ত্র ও সুশীল সমাজের মুখোশধারী কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্র করছে। তারা ৭১’র পরাজিত শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে এদেশেকে পাকিস্তান বানাতে চায়। ৩০ ডিসেম্বরের ভোটযুদ্ধে তাদেরকে ৭১’র মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায় পরাভূত করতে হবে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুদোহা বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বিগত বছরগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রজ্জ্বলতি করার জন্য নানান কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে নিবেদিত ছিল। এ প্রয়াস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মর্যাদাকে অধিকতরভাবে মহিমান্বিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় বাঙালি জাতি সর্বোত্তম অর্জন। এ অর্জনকে প্রজন্ম পরম্পরায় পৌঁছে দিতে সাংস্কৃতি কর্মীদেরই সবচেয়ে বেশি বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিশনের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, আমি আজ সত্যিকারভাবে গর্বিত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটি ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধের কীর্তিগাথাকে ধারণ করে আমাদের মাঝে উন্নয়ন সমৃদ্ধি ও জনকল্যাণে বার্তা পৌছে দিচ্ছে। একজন প্রকৌশলী হিসেবে চট্টগ্রাম সহ সমগ্র বাংলাদেশে যে উন্নয়নের অবকাঠামোগত নির্মাণ ও স্থাপনা হয়েছে তা আগামী প্রজন্মের কাছে একটি সুখী সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ বির্নিমানে সভার জন্য বাসযোগ্য ভূমিতে পরিণত হবে।

সভাপতির ভাষণে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক, চট্টগাম সিটি কর্পোরেশন ২৭নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এইচ এম সোহেল বলেন, বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের সকল মুক্তিকামী মানুষের আস্থা ও ভরসার ঠিকানা। একটি শোষণমুক্ত সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর আরাধ্য সোনার বাংলা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নকামী রাষ্ট্রের মডেল হিসেবে পরিণত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাই মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনের প্রধান ঠিকানা।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী সাংস্কৃতিক সংগঠক খোরশেদ আলম বলেন- একটি পবিত্র দায়িত্ববোধ থেকে এ বিজয় উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। এবারের বিজয় উৎসবের বার্তা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করে তাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্টিত করে অর্থনৈতিক মুক্তির বিপ্লব ঘটানো। এ বিপ্লবে আমরা মাঠে আছি, মাঠে থাকবো।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর’র সঞ্চালনায় অনুিষ্ঠত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের কার্যানিবাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা হাজী বেলাল আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা রায়হান ইউসুফ, চসিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, সচিব মো. আবুল হোসেন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, উপ সচিব আশেক রাসুল চৌধুরী টিপু, সমাজসেবক মো. আলমগীর, জমির উদ্দিন আহমেদ, নগর যুবলীগের সদস্য লিটন রায় চৌধুরী, সাবেক ছাত্রনেতা এস এম মামুনুর রশিদ, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক আবদুল আল মামুন ও ইয়াছির আরাফাত। আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিকর্মী রিংকু ভট্টাচার্য, নজরুল ইসলাম মোস্তাফিজ, দিলীপ সেন গুপ্ত, কবি সজল দাশ, মাসুদ উদ্দিন হামেদ নেওয়াজ, মুহাম্মদ এনাম উদ্দিন, মুজিবুর রহমান, রোজী চৌধুরী, শামসুন নাহার শীলা প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দু’দিনব্যাপী বণ্যাঢ্য বিজয় উৎসবের সূচনা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন। এর পরেই স্বাধীনতার জন্য নিবেদিত আত্মত্যাগ দানকারী ও বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.