জাতাীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান
কারেন্ট টাইমসঃ চট্টগ্রামে আয়োজিত ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও পেশাজীবীদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, পরাধীনতার গ্লানি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে কাজ করতে হবে এবং স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশ এবং দেশের মানুষকে মুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলন কক্ষে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক আবদুল মান্নান ভূঁইয়া বলেছেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপর দমন-নিপীড়ন চালাচ্ছে, এই কারনেই যে সারাদেশে তাদের সমর্থন রয়েছে মাত্র ১০-১২ ভাগ। তাই তারা যেকোনোভাবে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়। তারা যত অত্যাচার করবে করুক, সাধারণ মানুষ ৩০ তারিখ ব্যালটের মাধ্যমে এসব অত্যাচারের জবাব দিবে।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক আবদুল মান্নান ভূঁইয়া বলেন, গ্রেফতার করে বিএনপিকে দমানো যাবেনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রেখে আমাদের কাজ করতে হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে এজেন্ট নিশ্চিত করতে হবে। আর ৫ দিন পর আমাদের বিজয় হবেই। বিএনপির ভোট চাওয়ার প্রয়োজন নাই। কারণ সারা দেশে বিএনপির কোটি ভোটার রয়েছে। আমাদের কাজ হবে নিজের ভোট প্রয়োগ করা।
তিনি জাতাীয়তাবাদী শক্তির সবাইকে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, এই সংগ্রাম শুধু খালেদা জিয়ার মুক্তির সংগাম নয়, এই সংগ্রাম দেশের স্বাধীনতা মুক্তির সংগ্রাম। আমরা পরাধীনতার মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নাই, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নাই, চলাফেরার স্বাধীনতা নাই। এই পরাধীনতার গ্লানি থেকে দেশকে মুক্ত করতে হলে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।
ড্যাব চট্টগ্রাম শাখার সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক বেলায়েত হোসেন হালিম এর সঞ্চলনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকুমার বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সাদা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো: আখতার হোসেন খান, দৈনিক দিনকালের সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিকেন দেওয়ান।
সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকুমার বড়ুয়া বলেন, দেশে বর্তমানে সংকটময় মুহুর্ত বিরাজ করছে। চারদিকে চলছে হামলা-মামলা ও গণগ্রেফতার। আমাদের ৩০ তারিখের আগ পর্যন্ত এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে। এখন আমাদের প্রধান কাজ হবে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া, জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করা ও ভোট গণনা শেষ হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রে অবস্থান করা। যেকোনো কৌশলে হোক মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। মানুষে ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দলের সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে এই কাজটি করতে হবে।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাদা দল নেতা অধ্যাপক ড. মো: আখতার হোসেন খান বলেন, চিন্তার কোন কারণ নেই ৩০ তারিখ বিএনপি নেতাকর্মীরা ভোট কেন্দ্রে থাকলে বিজয় আমাদের হবেই। আজ সরকার মারমুখী হওয়ার একটাই কারন তাদের হাতে সময় আছে ২৮ তারিখ পর্যন্ত।
২৮ তারিখের পর রাজপথ ও সমস্ত অলিগলি জাতীয়তাবাদী দলের দখলে থাকবে। আমাদের পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট হয়নি কিন্তু মানুষের বুকের মধ্যে রয়েছে ধানের শীষ। ২০০১ সালে মানুষ বুকে নৌকা লাগিয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়েছে এবার বুকে ধানের শীষ নিয়েই ভোট দিবে সাধারণ মানুষ। আপনারা দেখবেন ৩০ তারিখ কিভাবে নারী-পুরুষ লাইন ধরে ভোট কেন্দ্রে যায়। কোন কোন জায়গায় নারীদের ভোট কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আজ নারীরাই বলছে আমরা শত বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে ভোট কেন্দ্রে যাবোই।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি ও বার কাউন্সিলের সদস্য এড. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় দৈনিক দিনকালের সম্পাদক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, সরকার নির্বাচনী ফলাফলকে নিজেদের পক্ষে নেয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় সকল সেক্টরে অনেক আগে থেকেই কাজ করে আসছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিটি সেক্টরে তারা দলীয়করণ করেছে। রিটার্নিং ও পুলিশ প্রশাসন তারা অনেক আগ থেকেই সাজিয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা চাইলে ভোটের ফল পরিবর্তন করে দিতে পারেন।
পুলিশ প্রশাসনে রদবদল না হওয়ায় তারা বেপরোয়া হয়ে গেছে। থানার ওসি নিজেই প্রার্থীর উপর গুলি করছে। তিনি আরো বলেন, বিচার বিভাগেই দলীয়করণের কারনে প্রতিটি আদালতেই কারাগারে পাঠাচ্ছে বিরোধী নেতাকর্মীদের। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হচ্ছে যুবকদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। ৩০ তারিখ ভোট বিপ্লবের মাধ্যমেই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে হবে।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম-৯ বিএনপির প্রার্থী কারাবন্দী ডাঃ শাহাদাতের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক এড. বদরুল আনোয়ার, এড. বদিউল আলম, ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলম, ড্যাব চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা: ঈসা চৌধুরী, আমার দেশ চট্টগ্রামের ব্যুরো প্রধান সাংবাদিক জাহিদুর রহমান কচি, পেশাজীবি নেতা ডা: খুরশিদ জামিল, এড. জহিরুল আলম, ডা: আবদুল মান্নান, জানে আলম, মো: সেলিম, ডা: আবুল কালাম, প্রকৌশলী একেএম জহিরুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক কর্মী ও জাসাস নেত্রী কেয়া চৌধুরী, এডভোকেট জহুর, কর আইনজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ওমর ফারুক।