নগরীতে সাড়ে ৩ বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছেঃ মেয়র

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন তাঁর দায়িত্ব পালনকালীন সময় গত ৩ বছর ৬ মাসে নগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে ৪ হাজার ৮৮১ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কাজ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ৭টি প্রকল্পের মাধ্যমে এসকল কাজ করা হয়।

এগুলোর মধ্যে বহদ্দারহাট বারইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বন্যা ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা সমূহের উন্নয়ন এবং নালা, প্রতিরোধ দেওয়াল, ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস নির্মাণ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, সৌর বিদ্যুৎ এবং জাইকার অর্থায়নে সিজেপি রয়েছে। সব কয়টি প্রকল্পের কাজ আগামী বছরের মধ্যে শেষ হবে।

এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী একটি সমন্বিত উন্নয়নের স্বাদ পাবে বলে জানান মেয়র। যা চট্টগ্রাম পৌর ইতিহাসে বিরল। এই সার্বিক সহযোগিতার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট সিটি মেয়র কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আজ রোববার সকালে কর্পোরেশনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৪২ তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ তথ্য জানান।

সভায় কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণ, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, সচিব মো. আবুল হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী লে কর্ণেল মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সাহেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়াসহ কর্পোরেশনের পদস্থ বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে মেয়র আরো বলেন, চসিকের উন্নয়ন কাজে এডিপি’র আওতায় ১৭টি বিএমডিএফ’র ৪টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে এর সুফল নগরবাসীই ভোগ করবে। তিনি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প এবং উন্নয়ন কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া আগামী ১ বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেন। সিটি মেয়র উন্নয়ন কাজ চলাকালে জনভোগান্তিকে সহনীয় পর্যায়ে রাখার ওপর জোর দেন। যে কোন উন্নয়ন কাজ করতে গেলে সাময়িকভাবে জনগণকে একটু ভোগান্তি পোহাতে হয়। তবে এটাকে যাতে সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

সভায় চসিকের যে সকল কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা কর্পোরেশনের তহবিল থেকে বিভিন্ন দাপ্তরিক ও কাজের স্বার্থে অগ্রীম অর্থ নিয়ে এখনো সমন্বয় করেনি, তাদেরকে আগামী ১ মাসের মধ্যে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়। এ ছাড়া নগরীর যে সকল স্থানে অবৈধভাবে যত্রতত্র বাজার বসে, নগরীর রাস্তাঘাট বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভ্যানের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে, তাদেরকে সময় নির্ধারণ করে দেয়া, নির্ধারিত সময়ের বাইরে কেউ কোন পণ্য বেঁচা কেনা করতে দেয়া হবে না। এ জন্য তাদেরকে সময় নির্ধারণ ও পরিচয় পত্র দেয়া হবে। এসব বিক্রয়কারীদের তাদের ভ্যানে পণ্যের তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে তালিকায় উল্লেখিত পণ্যের বাইরে কোন পণ্য বিক্রয় করতে পারবেনা।

সভায় কর্পোরেশনের পরিত্যক্ত জায়গায় উদ্যান স্থাপন, কর্পোরেশনের মালিকানাধীন দালানের ছাদে বাগান, গাছ পরিচর্যার জন্য মালি ও ভ্যান গাড়ি প্রদান, সাগরিকায় নতুন স্থাপিত মেটারিয়াল ট্রেস্টিং ল্যাবের পরিচালনার জন্য কমিটি গঠন, চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদের বীপরীতে নিয়োগদান, স্কুল, কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তি ফি ২০১৮ সনের সরকারি নীতিমালা অনুসরণ পূর্বক ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা এবং বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণের কিস্তির টাকা আদায় সংক্রান্ত সুবিধাভোগীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়ির হর্ণ না বাজানোর নির্দেশিকা সম্পন্ন পে-কার্ড লাগানোর সিদ্ধান নেয়া হয়।

সভায় অর্থ ও সংস্থাপন, শিক্ষা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য রক্ষা, নগর অবকাঠামো নির্মাণ ও সংরক্ষণ,আইন শৃংখলা,পরিচালনা ও রক্ষণা বেক্ষণ, যোগাযোগ, দারিদ্র হ্রাস করন ও বস্তি উন্নয়ন,নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন,পরিবেশ উন্নয়ন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি, সমাজ কল্যাণ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, হিসাব নিরীক্ষা এবং পানি ও বিদ্যুৎ ষ্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যানগণ স্ব স্ব কমিটির কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন এবং আলোচনান্তে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

সভার প্রারম্ভে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও হালিশহর দরবার শরীফের পীর হাফেজ সৈয়দ মুনির উদ্দিন নুরুল্লাহ (র.) এর কনিষ্ঠ পুত্র ছৈয়দ ছাবের আহমেদ মুনিরী, পীর মাওলানা জালাল উদ্দীন এবং কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলমের পিতাসহ সম্প্রতি নগরীতে নিহত ব্যক্তিদের নামে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মুনাজাত পরিচালনা করেন চসিক মাদ্রাসা পরিচালক আলহাজ্ব হারুন উর রশিদ চৌধুরী।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.