কোন ধরনের দুর্নীতি আমি টলারেট করব নাঃ ভূমি মন্ত্রী
কারেন্ট টাইমসঃ চট্টগ্রাম ভূমি অফিসের এল এ শাখার দুর্নীতির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এখানে পদে পদে মানুষকে হয়রানি, ক্ষতিগ্রস্থ ভূমিমালিকদের কাছ থেকে চেকের বিপরীতে কমিশনের নামে টাকা আদায়, চাহিদামত টাকা না দিলে মিলে না ক্ষতিপূরণের টাকা। সরকার যেখানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন সেখানে কতিপয় সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে উঠেছে। চট্টগ্রামের ভুমি অফিসসহ সর্বত্র চলছে দুর্নীতি। এখনো একটি খতিয়ান খুলতে গুনতে হচ্ছে ৮ হাজার টাকা। অথছ সরকারী খরচ ১৫০ টাকা। টাকা না দিলে এটা ওটা আইন দেখিয়ে পার করে দেয়া হয় বছরের পর বছর।
দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজদের ধরতে হঠাৎ করে ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত বিভিন্ন শাখায় হাজির হচ্ছেন স্বয়ং মন্ত্রী।
আজ রবিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১২ টার দিকে হঠাৎ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় হাজির হন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। সেখানে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় ভুক্তভোগী বাঁশখালীর শিহাব উদ্দিনের।
শিহাব উদ্দিন মন্ত্রীকে জানান, নিজ জমির কাগজপত্রের বিষয়ে জেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমার কাছে এসেছেন। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে তার ফাইল আটকে রেখে নানাভাবে হয়রানি করছেন এ সার্ভেয়ার।
সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত সার্ভেয়ার পরমেশ্বর চাকমাকে ডেকে পাঠান মন্ত্রী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ফাইল আটকে রাখার প্রবণতা কেন? মানুষকে ঘুরানো, হয়রানি করা- এসব কেন? আমরা তো মানুষের সেবা করতে চাচ্ছি। তোমরা কি অনেক বড় অফিসার হয়ে গেছ?’ আমাদের চেয়ে বড় অফিসার হয়ে গেছ? মানুষকে ক্ষমতা দেখাও? হোয়াট ননসেন্স ইজ দিস? এটা তো আমি টলারেট করব না।
তিনি আরও বলেন, নিচের লেভেলের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি আমার কাছে, ডিসির কাছে কিংবা এডিসির কাছে কোনো কমপ্লেন আসে, নিচের লেভেলে ফাইল আরও স্লো হয়ে যায়। তখন নানা আইন বের হয়ে যায়। এসবের কারণ কী?
ভূমিমন্ত্রী বলেন, একটা মানুষের কত টাকা দরকার। ১২ পার্সেন্ট, ১৫ পার্সেন্ট টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ শুনছি আমি। সরকার বেতন দিচ্ছে না? হারামের পয়সা খেয়ে লাভটা কী?
এর আগে, শনিবার বিকালে নগরীর সদরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী তীরে উচ্ছেদ কার্যক্রমের পূর্বপরিস্থিতি দেখতে এসে হৈ-চৈ ফেলে দেন মন্ত্রী। সেসময় তিনি বলেন, কর্ণফুলী আমাদের চট্টগ্রামের সম্পদ। যেভাবে হোক দলমত সবার ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের এটিকে রক্ষা করতে হবে। কারণ কর্ণফুলী নদী বাঁচলেই চট্টগ্রাম বাঁচবে। না হলে কিছুই করার নেই।
স্থাপনা উচ্ছেদে প্রভাবশালীদের কোনো চাপ আছে কিনা- এমন প্রশ্নে চট্টগ্রামের আনোয়ারা-কর্ণফুলী এলাকার সংসদ সদস্য জাবেদ ওই সময় বলেন, ‘কোনো প্রভাবশালী নেই, প্রভাবশালী বলতে আমি কিছু বুঝি না। সরকারে চেয়ে বড় প্রভাবশালী কে? আদালতের আদেশ আছে, সে অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীকে দখলমুক্ত করা হবে।’