চট্টগ্রাম হবে ভবিষ্যৎ ডিজিটাল ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু
সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম হবে প্রযুক্তিনগর ও ভবিষ্যৎ ডিজিটাল ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। হাইটেক পার্কের জন্য জায়গা প্রদান করার প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন আইসিটির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আগামীতে দেশ উন্নয়নে আইসিটির উপযোগিতা তিনি অনুভব করেছেন। তাই এককথায় তিনি ম্যাজিকের মতো জায়গা দেখালেন। আমি অভিভূত হলাম। কোনো প্রশ্ন, শর্ত ও বিধিবিধান ছাড়া একবাক্যে জায়গা দিয়ে দিলেন। এতে করে মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি আমার শ্রদ্ধাবোধও বেড়ে গেল। চান্দগাঁওয়ের জায়গাটাতে হাইটেক পার্কের সাথে আরো অনেক কিছু করা যাবে। আমাদের পরিকল্পণা রয়েছে।
সোমবার (১১ মার্চ) শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন ও জেলাপর্যায়ে আইটি/হাই-টেক পার্ক স্থাপন (১২ জেলা) প্রকল্পে জমি প্রদানকারী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সঙ্গে হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
নগর ভবনের চসিক সভা কক্ষে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রাম আগামী দু-এক বছরের মধ্যে প্রযুক্তিনগরে পরিণত হবে এবং শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের জ্ঞানভিত্তিক কর্মসংস্থান হবে । গত ১০ বছরে আইসিটি শিল্পের দ্রুত বিকাশ হয়েছে। এখন আইসিটি খাতে রফতানি আয় ১ বিলিয়ন ডলার। এটি ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। আইসিটি খাতে ১০ হাজার ৫০০ নারী উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে।
তিনি আরো বলেন, এই ১০ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে।
১০ বছর আগে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৫৬ লাখ, এখন ১০ কোটি। শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব হয়েছে ৯ হাজার। আরও ২৫ হাজার ৫০০টি ল্যাব তৈরি করা হবে। চসিকের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি করে ল্যাব তৈরি করা হবে। এদিকে চট্টগ্রামের একটি বিদ্যালয় পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে আইসিটি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ, জীবনযাপনের রূপান্তর শিশুরা জানে। চট্টগ্রাম ডিজিটাল যুগে পেছনে পড়ে থাকতে পারে না। চতুর্থ বিপ্লব হাইটেক পার্ক। মন্ত্রী আরও বলেন, চট্টগ্রাম শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত। মিরসরাইতে ইকোনমিক জোন হ”েছ। আগামী ৫ বছরে সব কারখানায় ডিজিটাল প্রযুক্তি কাজে লাগাতে হবে। দেশে এমন কোনো ইউনিয়ন থাকবে না যেখানে হাইস্পিড ইন্টারনেট থাকবে না। ইন্টারনেট একটি অবকাঠামো।
উন্নত বিশ্বের মানুষ ৫জি দিয়ে কথা বলছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ৫জি কী করতে পারে তা আমরা আন্দাজও করতে পারিনি। বন্দরের জাহাজ চলাচল বা চসিকের দৈনন্দিন কার্যক্রম নির্ভর করবে এ প্রযুক্তির ওপর। মেয়র দূরদর্শিতার সঙ্গে চট্টগ্রামের ভবিষ্যৎ দেখেছেন।চট্টগ্রামের অবস্থান ভিন্ন।
সারা বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ চট্টগ্রামের রয়েছে। ঢাকায় তো সমুদ্রবন্দর নেই। চট্টগ্রাম ডিজিটাল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। বাংলাদেশ রুপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, চসিকের বিএফআইডিসি রোড সংলগ্ন চান্দগাঁও ও চর রাঙামাটিয়া মৌজায় ১১ দশমিক ৫৫ একর জায়গায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এবং আগ্রাবাদের ব্যাংকক সিঙ্গাপুর মার্কেটের ৬-১১ তলায় হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ও ইনকিউবেশন সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। নির্মাণের পর প্রথম ৩০ বছর এ পার্ক দুইটি থেকে ৫০:৫০ রাজস্ব চসিক ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ভাগাভাগি করে নেবে।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনে চসিক ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয় ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই। ২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত এ পার্কে ২ হাজার ৫০০ জনের কর্মসংস্থান হবে।