দেশে বিচারের বাণী যেন নীরবে নিভৃতে না কাঁদেঃ প্রধানমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে বিচারের বাণী যেন নীরবে নিভৃতে না কাঁদে। দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব যেমন বিচারকদের, তেমনি আইন পেশার সঙ্গে জড়িতদেরও। তাই মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুততম সময়ে রায় দেয়ার উপায় বের করার দায়িত্ব দুপক্ষেরই। আদালতে বিচার চাইতে গিয়ে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, মামলার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে দ্রুততম সময়ে রায় দিতে বিচারপতিসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

আজ রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে জাতীয় আইনগত সহতায়তা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

আমাদের সমাজে যেসব অবিচার হয় এর দিকেও নজর দিকে বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। আজ মানুষই মানুষের নিষ্ঠুরতার শিকার বলে জানান তিনি।

মেয়েরা যেন বাবার সম্পত্তিতে পুরোপুরি ভাগ পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি সবার প্রতি অনুরোধ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের যে অধিকার সম্পদে, বাবা যে সম্পদ করে গেছেন, সেটা কেন অন্যরা টেনে নিয়ে যাবে। শরিয়া আইনের দোহাই দিয়ে সম্পত্তি কেড়ে নিয়ে যাওয়ার একটা সুরাহা করা যায় কি না একটু দেখবেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। সমাজের উচ্চবিত্তদের মধ্যে বোনকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার প্রবণতা বেশি বলে জানান। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান সরকার আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন ও নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে দেশের কোনো নাগরিক যেন ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যে আমরা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসসমূহ ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি’র কেন্দ্রস্থল হিসেবে মামলার পক্ষসমূহের মধ্যে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করছে, যা সারাদেশের আদালতসমূহে মামলাজট হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। ’৭৫ পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার হত্যা, দমন, নির্যাতন ও নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে। সুবিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়। দেশের জনগণ আইনগত সহায়তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

শেখ হাসিনা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে জনগণের বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করেন। তিনি তার বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে করতে পারতেন। জনসাধারণের অধিকারের কথা বিবেচনা করেই সাধারণ আদালতে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সংগ্রাম আর ত্যাগের বিনিময়ে আমরা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছি। গণতন্ত্র না থাকলে আইনের শাসন যেমন সুপ্রতিষ্ঠিত হয় না, তেমনি আইনের শাসন না থাকলে গণতন্ত্র টেকসই হয় না। আর আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় স্বাধীন বিচারব্যবস্থার বিকল্প নেই।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.