ইন্দোনেশিয়ায় ভোটের কাজের চাপে মৃত্যু ২৭০!
সিটি নিউজ ডেস্কঃ ইন্দোনেশিয়ায় জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অতিরিক্ত কাজের চাপে ২৭০ জনেরও বেশি নির্বাচনী কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে একদিনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচনে অতিরিক্ত পরিশ্রম করেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
গত ১৭ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সরকার ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনের ফলাফল প্রস্তুতে অতিরিক্ত সময় কাজ করে এবং হাতে লাখ লাখ ব্যালট পেপার গণনা করার কারণে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
সরকারি সূত্রের বরাতে বার্তাসংস্থা রয়টার্স আজ রবিবার খবর দিয়েছে, বেশিরভাগ নির্বাচনী কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে অবসাদ-সংক্রান্ত কারণে। তারা লাখ লাখ ব্যালট পেপার হাতে গণনা করতে বাড়তি সময় দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
ব্যয় নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে গত ১৭ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ছাড়াও আঞ্চলিক সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। দেশটিতে ২৬০ মিলিয়ন নাগরিক ভোটার।
সারা দেশে ওইদিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়। ধারণা করা হচ্ছে, ৮০ শতাংশ (১৯৩ মিলিয়ন) নাগরিক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
৮ লাখ পোলিং স্টেশনে প্রত্যেক ভোটার ৫টি করে ব্যালটে তার রায় দেন। টানা ৮ ঘণ্টা ভোটগ্রহণই কর্মকর্তাদের জন্য কষ্টদায়ক ছিল। এর ওপর পশ্চিম থেকে পূর্বে ৫ হাজার কিলোমিটারে এতসংখ্যক ব্যালট কর্মকর্তাদের হাতে গণনা করতে হয়, যা রীতিমতো বিপজ্জনক।
দ্য জেনারেল ইলেকশন কমিশনের (কেপিইউ) মুখপাত্র আরিফ প্রিয় সুশান্ত জানিয়েছেন, ভোটগ্রহণে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার কারণে অসুস্থ হয়ে গতকাল শনিবার রাতে ২৭২ নির্বাচনী কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে। আরও ১ হাজার ৮৮৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তিনি বলেন, অবস্থা বেগতিক হওয়ায় ২৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অসুস্থ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। আর নিহতদের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেছে। এত সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনায় কেপিইউ’র প্রতি দেশটির জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিরোধীদলীয় প্রার্থী প্রাবোও সুবিয়ানতোর নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের ডেপুটি চেয়ারম্যান আহমাদ মুজানি কুমপরান ডটকমকে বলেন, ‘কেপিইউ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের মধ্যে কর্মঘণ্টা ব্যবস্থাপনায় চরম অদুরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে।’
প্রাবোও সুবিয়ানতো ইতোমধ্যে স্বাধীন সংস্থার মাধ্যমে পুনরায় ভাট গণনার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট জকো উইডোর বিরুদ্ধেও তীর দাগেন, কারচুপির মাধ্যমে তাকে বিজয়ী করার জন্যই গণনার এমন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে।
তবে উইডো’র নিরাপত্তা বিষয়কমন্ত্রী বলেছেন, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট পদে দুই প্রার্থীই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, উইডো ৯-১০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
অবশ্য কেপিইউ জানিয়েছে, ভোট গণনা শেষ হলে আগামী ২২ মে প্রেসিডেন্ট ও আঞ্চলিক সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।