আর বাসায় ফেরা হলোনা ফারজিনার
সিটি নিউজ ডেস্ক : আন্যদিনের মত ২৩ মে সকালেও রোজা রেখে হালিশহর ফইল্যাতলী বাজার সংলগ্ন এলাকায় প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল ফারজিনা সুলতানা (২০)। সকাল ১১টার দিকে টেম্পোতে করে বাসায় ফিরছিল। প্রত্যক্ষদর্শিদের মতে তাঁকে বহনকারী গাড়ির চালক গাড়ি বেশ বেপরোয়া চালাচ্ছিল। আর হালিশহর চুনা ফ্যাক্টরী মোড় এলাকায় এসে খুব কড়া ব্রেক করায় ফারজিনার মাথা টেম্পোর পাশের রডের সাথে প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং তিনি টেম্পোর মেঝে ছিটকে পড়ে সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যান। এমতাবস্থায় তাঁকে প্রথমে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ও পরে জিইসি মোড় মেডিকেল সেন্টারে অইসিওতে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসক বলেছেন পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাঁর মাথায় প্রচন্ড আঘাতের ফলে মাথার ভিতরে মগজগুলো থেতলে এব্রো থেব্রো হয়ে গেছে।
দুর্ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হওয়ার পর থেকে তাঁর আর জ্ঞান ফিরেনি। পরদিন ২৪ মে সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তিনি অকাল মৃত্যুবরণ করেন। বাদ জুমা নামাজে জানাযা শোষে তাঁকে পারিবারিক কবর স্থানে সমাহিত করা হয়।
ফারজিনা সুলতানা নগরির উত্তর কাট্টলী আলহাজ্ব মোস্তফা-হাকিম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অর্থনীতি (সম্মান) বিভাগের ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছিল। নগরির ২৫ নং রামপুর ওয়ার্ড বড়পুকুর পাড় সংলগ্ন চৌধুরী বাড়ির মরহুম বদিউল আলমের ছোট মেয়ে ফারজিনা। ৫ ভাই ৩ বোনের মধ্যে ফারজিনা সপ্তম। তাঁর ছোট ভাইও একই কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। একই কলেজ হওয়ায় দুই ভাই বোন এক সাথেই কলেজে যাতায়াত করতো তারা। পরিবারের অন্য ভাই বোনদের মধ্যে একটু বেশি মেধাবী ছিল ফারজিন। লেখা-পড়ায় তাঁর বেশ আগ্রহ ছিল। বই-খাতার সাথে তাঁর একটা ভালো সম্পর্ক ছিল। অধ্যাবসায় তাঁর প্রধান কাজ ছিল। কোনভাবেই কোচিং, প্রাইভেট ও কলেজে অনুপস্থিত থাকা পছন্দ করতো না সে। তাই তার ই”ছাও ছিল পড়াশোনা শেষ করে ভালো কিছু করবে। কথাগুলো বললেন, মরহুম ফারজিনার বড় ভাই মোহাম্মদ সাইফুল।
কে জানত হঠাৎ এভাবেই রাস্তায় থেমে যাবে ফারজিনার স্বপ্ন। রান্তায় গাড়ি চালকদের এমন বেপরোয়া গতিতে এভাবে নিমিষেই ঝরে যায় হাজারো ফারজিনার তাজা প্রাণ। থেমে যায় স্বপ্ন। নিঃস্ব হয়ে যায় অনেক পরিবারও।
এদিকে তাঁর মৃত্যুতে উত্তর কাট্টলী আলহাজ্ব মোস্তফা-হাকিম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম, কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আলহাজ্ব দিদারুল আলম এমপি, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আলহাজ্ব সারওয়ার আলম, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলমগীর সহ কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ ফারজিনা সুলতানার অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।