ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রিফাতকে খুন করেছেঃ রিজভী
সিটি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেছেন বরগুনায় রিফাত শরীফের খুনিরা ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়েই ক্ষমতাধর ও ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য।
আজ সোমবার (১ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
রিজভী বলেন, বরগুনায় রিফাত শরীফের খুনিরা ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়েই ক্ষমতাধর ও ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য। বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী দুই নেতা ও সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের লোকজন এ লোমহর্ষক ঘটনায় জড়িত। রিফাত শরীফ হত্যার মূল আসামি নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী। হত্যা মামলার মূল আসামিরা বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের চিরচেনা দুই প্রতিপক্ষের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে ওঠার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ বরগুনায় এখন টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, রিফাত শরীফের হত্যাকারী রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী বর্তমান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে। দেলোয়ার হোসেনের প্রশ্রয়েই এ দুই ভাই রিফাত হত্যার মতো অপরাধ সংঘটনে দুঃসাহসী হয়ে ওঠে। আবার ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে এবং জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুনাম দেবনাথের ছত্রছায়ায় রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডসহ অন্যরা বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে। মামলার অন্যতম প্রধান আসামি হলেও তারা ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হওয়ায় পুলিশ তাদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
রিজভী বলেন, রিফাত ফরাজীর বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে বরগুনা সদর থানায় অন্তত চারটি মামলা রয়েছে। বরগুনা সরকারি কলেজে বখাটেপনার দায়ে পুলিশ তাকে দুইবার আটক করেছিল। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা না দেয়ায় পুলিশ মুচলেকা রেখে রিফাত ফরাজীকে ছেড়ে দেয়। মামলার চার নম্বর আসামি চন্দন ও ছয় নম্বর আসামি মো. রাব্বি আকন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। এ ছাড়া কিলিং মিশনে অংশ নেয়া আরেক যুবক সুহার্ত বরগুনা জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন সাবুর ছেলে। গ্রুপ ০০৭ থেকে ফাঁস হওয়া এক ছবিতে তাকে রামদা হাতে বসে থাকতে দেখা গেছে।
তিনি বলেন, বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের আদনান অনিকের সঙ্গে অভিযুক্তদের বিভিন্ন সময়ে ঘনিষ্ঠভাবে দেখা গেছে। তাছাড়া কিলিং মিশনে অংশ নেয়া অন্যান্য আসামিরাও জুবায়ের আদনান অনিকের অনুসারী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবি থেকে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে-ছাত্রলীগের বিভিন্ন মিটিং মিছিলে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, রিফাত শরীফ হত্যার ভয়ঙ্কর খুনীরা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় আছে। তাই তাদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না। এই মূহুতে তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।