চট্টগ্রামে লাগাতার বৃষ্টি, ভূমিধ্বসের আশঙ্কা

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাত, সমুদ্র্রে সতর্কতা সংকেত, ভূমি ও পাহাড় ধসের আশঙ্কায় ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় ‘মৃত্যুঝুঁকি’ নিয়ে বসবাসকারী লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। মাকিং করা হচ্ছে সর্বত্র।

বিশেষ করে পাহাড়ী এলাকায় বসবাসরত লোকজনের জন্য নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চালু করা হয়েছে ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীও। নগরীর সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরত লোকজনকে সরে যাওয়ার জন্য শনিবার থেকে মাইকিং করছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। রবিবার সকাল থেকে

নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণাসহ কয়েকটি এলাকায় মাইকিং করতে দেখা গেছে।এসব লোকজনকে সরিয়ে নিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং সরকারি সংস্থার নিয়ন্ত্রণাধীন পাহাড়গুলোর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। চট্টগ্রামে গত দুদিন ধরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। লাগাতার কয়েকদিন ভারী বর্ষণ হলেই প্রতি বছর ভূমি ও পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, সরিয়ে নেওয়া লোকজনকে যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়, এজন্য আকবর শাহ এলাকায় পাহাড়তলি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফয়’স লেক এলাকার ফিরোজ শাহ ই-ব্লক স্কুল, পলিটেকনিক কলেজ এলাকায় চট্টগ্রাম মডেল হাই স্কুল, জালালাবাদ হাউজিং এলাকায় জালালাবাদ বাজার সংলগ্ন শেড, ট্যাংকির পাহাড় এলাকায় আল হেরা ইসলামিয়া মাদ্রাসা, মিয়ার পাহাড় এলাকায় রৌফাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, মতিঝর্ণা পাহাড় এলাকায় লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পোড়া কলোনি এলাকায় ছৈয়দাবাদ স্কুলকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে।

নগরীর ৬টি সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছয়জন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার সমন্বয়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে আশ্রয় নিতে আসা লোকজনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির মজুদ রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর তদারকি করছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলাম।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের শঙ্কা থাকায় লোকজনকে সরিয়ে নিতে রবিবার সকাল থেকেই বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
লোকজনকে সরে যেতে মাইকিং করার পাশাপাশি তারা যাতে আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে এজন্য ৮টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, কোনো লোক ঝূকিঁপূর্ণভাবে পাহাড়ে বাস করতে পারবে না। তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্র অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় চলে আসতে হবে। রাতে কেউ যাতে পাহাড়ে থাকতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর, পাহাড়ের মালিক বা তদারকি সংস্থাকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি। প্রয়োজনে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা সেখানে অভিযান পরিচালনা করবেন। যেকোন মূল্যে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই আমরা।

এদিকে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, ভারী বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাত থেকে থেমে থেমে মাঝারি বর্ষণের কারণে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.