চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী দপ্তরের বিশেষ সেল গঠনের দাবী

0

সিটি নিউজঃ  রিং রোড প্রকল্প সেনাবাহিনীকে হস্তান্তর, মেট্রোরেল চালু *প্রকল্পপাসে ওয়ান স্টপ সার্ভিস, কালুরঘাটে নতুন রেলসেতু নির্মাণ, প্রকল্প পর্যবেক্ষণে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিযুক্তি, পুকুর চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, উন্নয়নে মেয়র ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সমন্বয়ক করা, চট্টগ্রামের মেগাপ্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিশেষ সেল গঠনের দাবি জানিয়েছেন ‘চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগ’র আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

আজ মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এ দাবি জানান তিনি।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীর উদার সহযোগিতার সুযোগে চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে যাতে কেউ নয় ছয় করতে না পারে সেজন্য চট্টগ্রামবাসীকে আরো সচেতন হওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। একই সাথে চট্টগ্রামের উন্নয়নে মেগা প্রকল্পগুলোর টেকসই বাস্তবায়নের নিশ্চয়তাও দাবি করা হয়।

প্রকল্পপাসে দীর্ঘসূত্রিতারোধে ওয়ান স্টপ সার্ভিসের কথা উল্লেখ করে পেশাজীবী নাগরিক সংগঠক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। চট্টগ্রামের দায়িত্ব নিজে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে নয় ছয় করা হচ্ছে। যে কারণে মানুষের মাঝে সরকারের প্রতি একটি বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে এবং জনগণ যে সুযোগ ভোগ করার কথা তা করতে পারছেন না। তাই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের বিশেষ তদারকি জরুরী প্রয়োজন।

সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সরকার বরাদ্দের যথাযথ ব্যবহার চাই। কারণ চট্টগ্রাম হচ্ছে বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রাম উন্নয়ন মানে বাংলাদেশের উন্নয়ন। উদ্বোধনের আগেই রিং রোডের ওয়াকওয়ে ধসে পড়েছে। তা অত্যন্ত দুঃখজনক। কোন ব্যক্তি বিশেষ বা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের জন্য সরকারের অর্জন ম্লান করে দেওয়ার সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না।

জাসদ নেতা ইন্দু নন্দন দত্ত বলেন, ‘চট্টগ্রামকে অপরিকল্পিত নগরে পরিণত করা হয়েছে। খাল দখর করে ঘরবাড়ি তৈরী করা হয়েছে। কারা এসবের অনুমোদন দিয়েছে, কেন দিয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে। সর্ষের মধ্যে ভূত লুকিয়ে আছে। চট্টগ্রামে গত ১০ বছরে সিডিএ যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছে সবগুলোতে দুর্নীতি হয়েছে। সিডিএ এর প্রধান ও তার আত্মীয় স্বজনদের ব্যাংক আ্যাকাউন্ট চেক করা দরকার। তাহলে অনেক কিছু বের হয়ে আসবে।’

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস বলেন,‘প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছের যথাযথ ব্যবহার যদি আমরা করতে না পারি তবে তা আমাদেরই ক্ষতি। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে আরো দায়িত্ববান হওয়া দরকার সেবা সংস্থাগুলোর। যাদের এসব কাজে অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদেরকে দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত। এক্ষেত্রে সিটি মেয়র যেহেতু নির্বাচিত প্রতিনিধি সেহেতু তাকে প্রধান করে এসব উন্নয়ন তদারকি করা যায়।

এছাড়া সমাবেশ থেকে আরো একগুচ্ছ দাবি জানান বক্তারা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালু, প্রকল্পপাসে দীর্ঘসূত্রিতারোধে ওয়ান স্টপ সার্ভিস, কালুরঘাটে নতুন রেলসেতু নির্মাণ, প্রকল্প পর্যবেক্ষণে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি নিযুক্ত করা, প্রকল্পগুলোর পুকুর চোরদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ, শহর উন্নয়নে সকল সংস্থার প্রকল্পের সমন্বয়ে সিটি মেয়র এবং জেলায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে সমন্বয়ক করা, চট্টগ্রাম শহরের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ও সংস্কার কাজের ময়লা যাতে খালে ফেলা না হয় সে জন্য নজরদারি বাড়ানো, নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ, যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুরো চট্টগ্রামকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা ও উন্নয়ন কাজের সুফল নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের যথার্থ সহায়ক ভূমিকা নিশ্চিতে নবম ওয়েব বোর্ড ঘোষণা ও টেলিভিশন সাংবাদিকদের জন্য মর্যাদা সম্পন্ন ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ প্রদান । একই সাথে দুর্নীতি বিরোধী প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে চট্টগ্রামের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নিন্দা প্রস্তাবসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানানো হয় এই মানববন্ধন সমাবেশ থেকে ।

নাগরিক উদ্যোগের আহ্বায়ক পেশাজীবী নেতা রিয়াজ হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং বঙ্গবন্ধু সাংস্কুতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, জাসদ কেন্দ্রীয় ষ্টান্ডিং কমিটির সদস্য ইন্দু নন্দন দত্ত, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস,পরিবেশবিদ মূক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, নারীনেত্রী নুর জাহান খান, শিক্ষাবিদ শিল্পী হাসিনা জাকারিয়া বেলা, ১৪ দলীয় নেতা ন্যাপের সাংগঠনিক সম্পাদক মিতুল দাশগুপ্ত, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুমন দেবনাথ, সাংবাদিক তারুণ্যের উদ্যোগ সংগঠক প্রীতম দাশ, সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ, সাবেক ছাত্রনেতা জাবেদুল আলম সুমন, এম এ মান্নান শিমুল,আবদুল্লাহ আল মামুন,আরিফ মঈনুদ্দিন,শাহেদ মিজান, তরুণ সংগঠক জনী বড়ুয়া, ইমরান সোহেল, মেজবাহ উদ্দিন, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান আলী মাসুদ, মাকসুদুর রহমান মাসুদ, নাসির উদ্দিন কুতুবী,রায়হানুল হক শামীম, অনিন্দ্য দেব, আবু সায়েম, ইয়াসির আরাফাত বাপ্পী প্রমুখ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.