নগরায়নে পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাব রয়েছেঃ ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী

0

জুবায়ের সিদ্দিকীঃ ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী। একজন অভিজ্ঞ প্রকৌশলী, সমাজ সেবক, সংগঠক ও আওয়ামী লীগ ঘরনার একজন সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ বাদামতলীর ২৮ নং ওয়ার্ডের অধিবাসী। বিশিষ্ট সমাজসেবক ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম ছালে আহমদ চেয়ারম্যানের সুযোগ্য পুত্র ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী সদালাপী, স্পষ্টভাসী ও দক্ষ একজন প্রকৌশলী হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত। পিতা ছালে আহমদ চেয়ারম্যান এর নামে নিজ এলাকার রাস্তার নাম করণ করেছে সিটি কর্পোরেশন। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল ও চট্টগ্রাম কলেজে লেখাপড়া করেছেন তিনি। ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ এর ভাইস-প্রেসিডেন্ট , কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ইনডেপেন্ডেট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক, ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপতালের আজীবন সদস্য ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি।

ছাত্রজীবনের শুরুতে কলেজিয়েট স্কুলের লেখাপড়ার সময় জড়িয়ে পড়েন ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে। এরপর ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে এখনও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে আওয়ামী লীগের কান্ডারী হয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে দেশের সেবায় শ্রম, মেধা, মননে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেছেন।

গত সপ্তাহে রাতে নগরীর বাদামতলীতে নিজ বাসভবনে একান্ত সাক্ষাৎকারে নগর ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগরীর অবকাঠামোগত উন্নয়নে নিজস্ব অভিমত সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শহরকে জনগনের বসবাসের উপযোগী করতে যে সমন্বয় উদ্যোগের প্রয়োজন, সেটা বিবেচনায় আনা হয়নি। নগরায়নের যারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ, যাদের হাত দিয়ে টাকা খরচ হবে, কাজে রূপান্তরিত করবে, তাদের কোন টেকনিক্যাল নলেজ ছিলনা।

সমন্বিত পরিকল্পনায় চট্টগ্রাম ওয়াসা, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ ৪টি সংস্থা যদি সমন্বয় করে কাজ করতে না পারে, যে যত টাকা খরচ করুক, যে যেভাবে উন্নয়ন করুক, এটার সুফলতা জনগণ পাবে না। শুধু টাকা খরচ হবে। যেমন ধরুন, নগরীতে যে উড়াল সেতু করা হয়েছে তা না করে বিকল্পভাবে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। চ

ট্টগ্রামে যে পরিমান যানবাহন আছে তা যদি আপনি ঢাকার সাথে তুলনা করেন তাহলে কিছুইনা। কিন্তু দেখেন, অতি অল্পের মধ্যে তীব্র যানজট হচ্ছে। চট্টগ্রামে যারা গাড়ী চালায় বা গাড়ীতে যারা চড়েন, তারা আইনকে মেনে চলার মনমানসিকতা নেই। এই আইন না মানার কারনে যারা পদক্ষেপ নেবেন তারা নিচ্ছেন না। ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত নয়, কর্তব্যরত অবস্থায় দেখা গেছে তারা অন্যমনস্ক হয়ে ব্যাক্তিগত কাজেই ব্যাস্ত।

ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন সিটি কর্পোরেশনকে। সরকার সিটি কর্পোরেশনের উপর আস্থা রাখতে পারেননি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাবেক সিডএ চেয়ারম্যান সালাম সাহেবের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন যে, তিনি জলাবদ্ধতা নিরসনে সঠিক পদক্ষেপ নিবেন। কিন্তু সিডিএ চেয়ারম্যানের কোন স্বচ্ছ পরিকল্পনা ছিলনা। তাকে সহযোগীতা করার মতো কোন নগর পরিকল্পনাবিদ ছিলনা। এই কাজ করতে যে জ্ঞান প্রয়োজন তা তাদের ছিলনা। যাদের থেকে পরামর্শ নেওয়ার ছিল তা হয়নি। এখানে কি উড়াল সেতু হবে নাকি রাস্তা প্রশস্ত হবে তা যাচাই করা হয়নি। আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতায় দেখেছি, চেন্নাই ও বোম্বের শহরে উড়াল সেতু বা রাস্তার ট্রাফিক সিস্টেম উন্নত। তাদের পদ্ধতি ও আমাদের পদ্ধতির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

অন্যান্য শহরের তুলনায় উন্নয়নে চট্টগ্রাম পিছিয়ে আছে এটা স্বীকার করেন কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার কারন হচ্ছে অক্ষমতা। সরকারের যথেষ্ট আন্তরিকতা রয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্বভার আমি নিয়েছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এমনকি আমাদেরকেও বলেছেন যে, অর্থের প্রয়োজন হলে দেব এবং যা যা করার দরকার করব। আপনি লক্ষ্য করবেন, তিনি টাকা ছাড় দিতে বিলম্ব বা কার্পণ্য করেননি। এটা আমাদের দুঃখ, আমরা জায়গামত টাকাগুলো ব্যবহার করতে পারিনি।

জোয়ারের পানিতে নগরীতে সয়লাব সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ড্রেনেজ সিষ্টেমকে আধুনিকায়নসহ কাজ করতে হবে। আপনার নিশ্চয় মনে আছে সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র থাকাকালে প্রথমে শেখ মুজিব রোডে বক্স কালভার্ট করেছিলেন। এই কালভার্টের সুফল ও কুফল দুটোই আছে। বর্জ্য জমা হয়ে থাকলেও এখন বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা শেখ মুজিব রোডে হচ্ছেনা। এটা তার সুদুর প্রসারী ভাল পদক্ষেপ ছিল। এটা না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতো। এই বক্স কালভার্টটি রুটিন অনুযায়ী পরিস্কারের কথা থাকলেও তা করা হয়নি। কোন এক সময় দেখবেন, এটা জ্যাম হবে, আমরা আবার জলাবদ্ধতায় ফিরে যাব। সুষ্ট পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবে জনগন কোন সুফল পাচ্ছেন না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.