সিটি নির্বাচনে হেরে গেলে সরকারের উপর আকাশ ভেঙে পড়বে নাঃ কাদের

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্বচ্ছ নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন । তিনি বলেন, যেই জিতুক কিছু আসে যায় না। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হেরে গেলে সরকারের উপর আকাশ ভেঙে পড়বে না। আমরা সুস্থ এবং সুন্দর একটা ইলেকশন উপহার দিতে চাই।

আজ বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে পলিটিক্যাল সায়েন্স এলামনাই এসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা পুনর্মিলনী ও গুণীজন সংবর্ধনা ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। বিভিন্ন দল অংশ নিচ্ছে, আমাদের প্রতিপক্ষ বিএনপিও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে আমরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। ইলেকশন কম্পিটিটিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হোক, প্রতিযোগিতামূলক। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই এই নির্বাচন ফ্রী ফেয়ার হবে, সুষ্ঠু হবে, এক্সেপ্টেবল হবে। ক্রেডিবল একটা ইলেকশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করতে চান।’

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকায় মেট্রোরেল হচ্ছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। এর নির্মাণকাজ শেষ হলে ঢাকার চেহারাই পাল্টে যাবে। ঢাকার বাইরেও নয়টির মতো ফ্লাইওভার হয়েছে এবং হচ্ছে। শেখ হাসিনার আমলে একটা বিস্ময়কর উন্নয়ন হচ্ছে। আগে স্যাটেলাইট ভাড়া করতে হতো, কিন্তু এখন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করতে পারছে। আজ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। শেখ হাসিনার উন্নয়নের জন্য আজ বিশ্বসভায় বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে, যা উন্নয়ন হয়েছে, তা কোনো দলের জন্য নয়। যেমন শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের জন্য করেননি, করেছেন ১৬ কোটি মানুষের জন্য।

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিএনপিকে স্বাগত জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করতে চান। কে জিতল, তাতে কিছু আসে-যায় না। আওয়ামী লীগ হেরে গেলে আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।’

বাংলাদেশে বারবার বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা চিরদিন ক্ষমতায় থাকব না। কখন কী হয় তা কি বলা যায়! চোখের পলকে এই দেশে অনেক কিছু ঘটে গেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, অসহিষ্ণুতা আমাদের রাজনীতি ও পরিবেশকে বিষাক্ত করেছে। রাজনীতির অলঙ্ঘনীয় দেয়াল ক্রমেই উঁচু হচ্ছে। আমি সেতুমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী আমাকে পদ্মা সেতু নির্মাণের দায়িত্ব দিয়েছেন, ছোট-বড় অনেক সেতু নির্মাণ করেছি। কিন্তু আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পারিবারিক জীবনে এবং রাজনীতিতে অনেক সেতু দরকার।’

নিজের সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত মার্চে আমার ওপর যা নেমে এসেছিল, কিছুক্ষণের জন্য এমনও মনে হয়েছিল যে আমি আর নেই। সেদিন মৃত্যুর খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম। নেত্রী যদি আশ্চর্য দ্রুততায় আমার চিকিৎসার সিদ্ধান্ত না নিতেন, তাহলে কী হতো জানি না।

তিনি বলেন, আমি জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসে রয়েছি। আমার পুরো জীবনটাই সংগ্রামের। কঠিন পরিশ্রম করে জীবনের অনেকগুলো স্তর পেরিয়ে এই পর্যায়ে উন্নীত হয়েছি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে আমার চেয়ে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কিন্তু আমি যে উচ্চতায় পৌঁছেছি, তা সবার ভাগ্যে জোটে না। আমি প্রতিকূল স্রোতে সাঁতার কাটতে ভালোবাসি।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.