চট্টগ্রাম দক্ষিন বনভূমিতে নির্মিত হচ্ছে অবৈধ বহুতল ভবন

0

বশির আলমামুন, চকরিয়াঃ চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের চুনতি রেঞ্জের অধীন চকরিয়া উপজেলার হারবাং, বরইতলী ও পহরচাঁদা বিটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছ কেটে অন্যত্র পাচার করছে বনদস্যূরা। একই সাথে ফাঁকা জায়গায় বহুতল ভবন নির্মান করছে ভূমিদস্যূরা।

চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা ওবাইদুল্লাহর প্রত্যক্ষ মদদে সংশ্লিষ্ট বিট কর্মকর্তা,কর্মচারীরা চট্রগ্রাম দক্ষিন বিভাগীয় বনকর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে সংঘবদ্ব কাঠচোর ও একশ্রেণীর ভূমি দখলবাজদের সাথে আতাত করে বনের গাছ উজাড় করে বনের মধ্যে বহুতল ভবন নির্মাান করে চলেছে।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাড়কের দুই পাশের্^র হারবাং স্টেশনের পূর্বে, বানিয়ারছড়া ও মোহাম্মদ নগরের বনভূমি দখলে নিয়ে মাদার ট্রি গর্জন সহ নানা প্রজাতির গাছ কেটে নির্মান করা হচ্ছে অবৈধ বহুতল ভবন। হারবাং, বরইতলীর ও পহরচাঁদার বনবিট কর্মকর্তারা মিলে স্থানীয় প্রভাবশালী ও বিত্তশালী ব্যক্তিদের সাথে আতাত কওে মোটা অংকের টাকার নিয়েবিনিময়ে বনের গাছ এবং ভূমি দুটোই বিক্রি করে দিচ্ছেন এমন দাবী বাড়ী নির্মাতাদের।

এতে দখলদারের হাতে চলে যাচ্ছে চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের অধীন চকরিয়ার বরইতলী বনবিট সংলগ্ন বানিয়ার ছড়া, রিজার্ভ ফরেস্ট, মোহাম্মদ নগর ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাড়কের দুই পাশের্^র হারবাং এর বনভূমি ও বনজ বাগান। এতে বনের মূল্যবান গাছ উজাড় হয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানায়, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট কে নিয়ে সংশ্লিস্ট বিট কর্মকর্তারা ১৫ হাজার থেকে লাখ টাকায় প্লট আকারে সংরক্ষিত বনভূমি দখল দিচ্ছে আর বনের মাদার ট্রি গর্জন কাঠ চোরদের বিক্রি করে দিচ্ছে।। সচেতন মহল প্রথম দিকে প্রতিবাদ করলেও পরে বনবিট কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেটের হুমকি-ধমকিতে চুপসে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, বরইতলী বনবিটের বানিয়ারছড়া ষ্টেশন সংলগ্ন বনবিট অফিসের পাহাড়ে গত কয়েক বছরে পাকা-আধাপাকা নতুন শতাধিক অবৈধ ঘরবাড়ী নির্মান হচ্ছে। নির্মানাধীন এসব বাড়ীর মালিকরা জানান, প্রতিটি বাড়ী নির্মান বাবত বিট কর্মকর্তা ও বন প্রহরিদের ম্যানেজ করতে হয়েছে টাকার বিনিময়ে।

অনেকে ঘর নির্মান করে আবার বিক্রি করছে ডাবল দামে। অপরদিকে হারবাং বনবিটের অধীনে ইনানী রিসোর্ট,হারবাং স্টেশনের পূর্বে করমহুরীপাড়া, সাবানঘাটা, গয়ালমারা, উত্তর হারবাং এর রিজার্ভ বনের ভিতর নির্মান করা হচ্ছে অবৈধ দালান। তাছাড়া পহরচাাঁদা বনবিটের অধীনে বরইতলী-মগনামা সড়কের দু’পার্শ্বের রিজার্ভ বনভূমিতে নির্মান করা হয়েছে একাধিক দালান।

এসব কর্মকান্ডে চুনতির রেঞ্জার, বন কর্মকর্তা-বনকর্মী ও ভিলেজার নামধারী ব্যক্তিরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার কারনে দিনে দুপুরে জমি দখল বিকিকিনি এখানে ওপেন সিক্রেট। আগে পলিথিনের বেড়া দিয়ে কাজ করলেও বর্তমানে বনবিভাগ ম্যানেজ থাকায় বাধা দেয়ার কেউ নেই।

কর্মকর্তাদের প্রশ্রয়ে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে
কর্মকর্তাদের প্রশ্রয়ে গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে

এ ব্যাপারে হারবাং বনবিট কর্মকতার্র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ কে ম্যানেজ করে বনভূমিতে দালান নির্মিত হচ্ছে।

জানতে চাইলে চট্রগ্রাম দক্ষিন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী জানান আমি এসব বিষয়ে তেমন কিছু জানিনা। পদুয়ার এসিএফ, চুনতির রেঞ্জার এদের সাথে যোগাযোগ করেন। যে কোন বিষয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করে লাভ কি। তবে বনভূমি অবৈধ ভাবে জবর দখল করে ভবন নির্মান করে থাকে তাহলে জড়িতদের বিরুদ্বে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চট্রগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক আবদুল আউয়াল সরকার বলেন সংরক্ষিত বনাঞ্চলে জবর দখল ও গাছ কাটার কথা জেনে চট্রগ্রাম দক্ষিন বিভাগীয় বনকর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.