একনেকে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প অনুমোদন

0

সিট নিউজ ডেস্কঃ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছে জাতীয়। এর মধ্য দিয়ে গভীর সমুদ্র বন্দর যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ।

আজ মঙ্গলবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।

এতে মোট খরচ হবে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ ১৪ হাজার, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ ৯৪ হাজার এবং বৈদেশিক ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার টাকা।

সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর কোনো আবেগের জায়গা নয়। এটা প্রয়াজন। এ প্রকল্পের কিছু ব্যয় বেশি ধরা আছে। এক্ষেত্রে সব ব্যয় সরলীকরণ করলে হবে না। এর যথেষ্ট কারণও আছে। যেমন পায়রা ও মাতারবাড়ির জমির কনফিগারেশন এক নয়। তাছাড়া মাতারবাড়ীর সড়ক কোনো সাধারণ সড়ক হবে না। এগুলো মূলত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো হবে। প্রকল্পটিকে স্বপ্নের প্রকল্প এতে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রকল্প এলাকা হলো কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী ও ধলঘাট।

এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, চট্টগ্রাম, মোংলা, পায়রার পর চতুর্থ বন্দর হচ্ছে মাতারবাড়ী। আমরা চাই বা না-চাই, অর্থনীতির চাপে বিশাল বন্দরে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রচুর বেড়ে গেছে। আমাদের চট্টগ্রামবন্দরে যে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হয়, জায়গা হচ্ছে না। তবে এ বন্দরে অধিক ড্রাফটের ৮ হাজার টিইইউএস কন্টেইনারবাহী জাহাজ ভিড়তে পারবে।

তিনি বলেন, এটার সম্ভাব্যতা যাচাই, নকশা, লে-আউট করেছে জাইকা। আমাদের নিজস্ব একটা স্টাডি ছিল, এটা রিভাইস করেছে তারা। তারপর মোট খরচ এসেছে।

এছাড়া পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শীর্ষেন্দুর দেওয়া চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এই সেতুটি দ্রুত হয়েছে। সেজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এমনিতেই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সব নদীতে যেন সেতু হয়। সে হিসেবে পায়রার নদীর ওপরও সেতু হতো। কিন্তু শীর্ষেন্দুর চিঠি পাওয়ায় সেটি ত্বরান্বিত হয়েছে।

করোনা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস নিয়ে আজ তেমন কিছু বলেননি। তবে সকলকে সাবধান থাকতে বলেছেন। বেশি করে ফল খেতে বলেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারাবিশ্ব করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বের বাইরে না। সুতরাং আমাদের এখানেও প্রভাব পড়বে। তবে কতটুকু প্রভাব পড়বে সেটি এখনো বলা যাচ্ছে না। কিন্তু ইতোমধ্যেই চীন থেকে অনেক ব্যবসা দেশে আসতে শুরু করেছে। এটি পজেটিভ দিক।

এছাড়া একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘লেবুখালী-রামপুর-মির্জাগঞ্জ সংযোগ সড়ক নির্মাণ’ প্রকল্প ও ‘কচুয়া-বেতাগী-পটুয়াখালী-লোহালিয়া-কালাইয়া সড়কের ১৭তম কিলোমিটারে পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প; গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে ‘স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ফায়ারিং রেঞ্জের আধুনিকায়ন’ প্রকল্প ও ‘জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা কার্যালয়ের ২০তলা ভিতবিশিষ্ট দুটি বেজমেন্টসহ ১০ তলা (সংশোধিত ২০ তলা) প্রধান কার্যালয় নির্মাণকাজ (দ্বিতীয় সংশোধন)’ প্রকল্প, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্প, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে মৎস্যসম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলাধীন পাকেরদহ ও বালিজুরি এবং বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলাধীন জামথল এলাকা যমুনা নদীর ভাঙন হতে রক্ষা’ প্রকল্প এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা স্যানিটেশন ইনম্প্রুভমেন্ট’ প্রকল্প।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.