সরকারের কাছে মানুষের কোন মূল্য নেইঃ কর্নেল অলি

0

সিটি নিউজঃ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)’র প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় মুক্তিমঞ্চের আহ্বায়ক ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, দেশে অদ্ভুত সরকার, যাদের কাছে মানুষের কোন মূল্য নেই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ সরকার কোন পদক্ষেপ না নিয়ে শুধু যুক্তিতর্ক এবং টেলিভিশনের বক্তব্যের মধ্যে কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছেন। এখনও পর্যন্ত জনগণের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয়নি, এমনকি জনগণকেও দিক নির্দেশনা দেয়নি।

আজ রবিবার (২২ মার্চ) এলডিপির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাহ উদ্দীর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেছেন।

কর্নেল অলি বলেছেন, শুধু সাবান, এন্টিসেপটিক দিয়ে হাত পরিস্কার বা মুখে মাস্ক লাগিয়ে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। সরকারের উচিত ছিল নিম্নের পদক্ষেপগুলি জরুরী ভিত্তিতে গ্রহণ করা।

জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠন করা। উপজেলা ও পৌরসভা পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠন করা। ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য সেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও তাদের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, করোনা ভাইরাস সনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম জরুরীভিত্তিতে ৭ দিনের মধ্যে ক্রয় করার ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।

দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ, জনগণের মধ্যে শৃঙ্খলা রক্ষা, কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে দায়িত্ব দেয়া। বিদেশ থেকে ফেরৎ বা আসা ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা।

এতে করে রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হত। যা যথাসময়ে করা হয় নাই। জনগণকে আশ্বস্ত করার জন্য বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, পৌরসভায় কোথায় কোথায় কোয়ারেন্টাইন ক্যাম্প হবে বা চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে, তা পরিস্কারভাবে জনগণকে জানানো। করোনা ভাইরাসকে ভয় পাবেন না, সচেতন হন। শুধুমাত্র এই ধরণের শ্লোগান দিয়ে করোনা ভাইরাসের ব্যাপ্তি রোধ করা সম্ভব নয়।

৩০ দিন পূর্বে সকল প্রকার জনসমাবেশস্থল নিয়ন্ত্রণের আওতায় নিয়ে আসা উচিত ছিল। যেমন- বিমান বন্দর, সমুদ্র বন্দর, বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশনগুলি, সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সমাবেশ ইত্যাদি। এতে করে জনগণের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হত না।

যে যাই বলুক না কেন- জনগণের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশের অনেক জায়গায় খাদ্য দ্রব্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সংকটকালীন সময়ে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও শিল্প কলকারখানাকে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক প্রনোদনা দেওয়ার পদক্ষেপ প্রহণ করতে হবে। বাস, লঞ্চ এবং রেলযোগে অতিরিক্ত যাত্রী বহন নিষিদ্ধ করতে হবে।

তা নিশ্চিত করার জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব দিতে হবে, কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই রোগের বিস্তার রোধ করতে হবে। আমাদের সকলের উচিত অতি প্রয়োজন ব্যতীত নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করা। এমনকি ঘরের মধ্যে অবস্থানকালীন সময়ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনাবলী পালন করা। প্রয়োজনে সরকার জনগণকে ঘরে অবস্থান করার জন্য বাধ্য করতে হবে।

কনের্ল অলি আরো বলেন, এ ধরনের সংকট থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের সকলের উচিত নিজ নিজ কৃত কর্মের জন্য আল্লাহ কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। সকল প্রকার অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা। দ্রব্যমূল্য ও মুনাফা নিয়ন্ত্রণে রাখা। ইসলাম ধর্ম বিরোধী কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকা। জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা।

বিভিন্ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক সৃষ্টি করা ও তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। আশা করি সরকার অনতিবিলম্বে আমাদের এ পরামর্শগুলি বিবেচনায় নিয়ে অগ্রসর হবেন। অন্যথায় সংকট আরো বৃদ্ধি পাবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.