সরকার করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে কানে তুলো দিয়েছেঃ ফখরুল

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হয়ে কানে তুলো দিয়েছে। তিনি করোনা মহামারীর ভয়াবহতা বিবেচনা না এনে সবকিছু খুলে দিয়ে সরকার এখন কানে তুলো দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন ।

আজ সোমবার (১ জুন) বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কাল থেকে দেখছি, রেলগাড়ি চলছে এবং ট্রেনগুলোতে সেই গাদাগাদি করে মানুষ আসছে। এর মধ্যে আপনারা দেখেছেন, রীতিমতো মারামারি হচ্ছে বাসে উঠার জন্য, জায়গা পাওয়ার জন্য। এটা সম্ভব না বাংলাদেশে। এভাবে গণপরিবহন কেন নিয়ন্ত্রণ করবেন? যেখানে আপনি অফিস খুলে দিয়েছেন, অফিস খুললে তো লোকজন আসবেই। লঞ্চেও একই অবস্থা হয়েছে। এখন সরকারের অবস্থা হচ্ছে- ‘কানে দিয়েছি তু্লো’। তারা কানে দিয়েছে তুলো, যা খুশি বলছেন, আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা তো আছি।’

তিনি আরো বলেন, বার বার করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাদের (সরকার) নিয়োজিত যে টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি রয়েছে তারাও বলছেন যে, এটা (সব কিছু খুলে দেয়া) একটা সুইসাইডাল। এটা করলে একটা ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হবে। তারা সেই কথা শুনেননি। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর যে ব্যক্তিগত চিকিৎসক যিনি আছেন আবদুল্লাহ (অধ্যাপক এম আবদুল্লাহ) সাহেব, তাকে এডভাইজার হিসেবে নেয়া হয়েছে তিনি পরিস্কার করে বলেছেন যে, এটা ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করবে, সংক্রামণ আরো ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাবে। এটা পরিস্কার যে, তারা (সরকার) ব্যর্থ হয়েছে এই করোনাভাইরাসের উদ্ভুত যে পরিস্থিতি সেটাকে সামাল দিতে।

ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি, এটা আরো সময় নিতে পারতো। ভারতে দেখেন, তারা সব রাজ্যের চিফ মিনিস্টার, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিদের সঙ্গে কথা বলেছেন, কথা বলে আরো একমাস লকডাউন বাড়িয়েছে। যে কথাটা আমি বার বার বলেছি, দায়িত্বশীলতা নেই বলেই সরকার এভাবে তুগলগি কারবার করছেন। যেটা জনগণকে পুরোপুরিভাবে মহাবিপদের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।

বাস ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অমানবিক অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে একটা অমানবিক কাজ করা হয়েছে। আর এমনিতেই মানুষের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। বাসে কারা উঠে? কম আয়ের সাধারণ মানুষেরাই বাসে উঠে। তাদের বাস ভাড়া বাড়িয়ে দিলো। কার স্বার্থে বাড়িয়েছে? মালিকদের স্বার্থে বাড়িয়েছে। মালিকদেরকে আবার প্রণোদনা দিচ্ছে, অনুদান দিচ্ছে। পুরো বিষয়টা হয়েছে লুটপাটের জন্য, পুরোপুরি লুটপাট। শুধুমাত্র দুর্নীতির চরমভাবে সুযোগ নিচ্ছে সবাই।’

এসময় বর্তমান পরিস্থিতিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের নেয়া কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল।

কর্মসূচিগুলো হল- ১০ জুন প্রতিটি জেলায় প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে চলতি মৌসুমে বোরো ধান ক্রয়ের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ, আর্থিক ও পরিবহন সংকটে যেসকল কৃষক ধান বিক্রি করতে পারছে না তাদেরকে কৃষকদল থেকে সহায়তা প্রদান এবং প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে চলমান ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রাখার কথাও জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রয়াত শিল্পপতি আব্দুল মোনেম, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ, শিক্ষাবিদ আবদুল কাদের ভুঁইয়াসহ করোনায় আক্রান্ত নিহতদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ফখরুল। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, তার স্ত্রী শিরিন পারভিন হক, ছেলে বারিশ হাসান চৌধুরী, প্রবীন আইনজীবী আবদুর রেজ্জাক খান ও তার স্ত্রীসহ গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও চিকিৎসকের আশু রোগমুক্তি কামনা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিন, সদস্য মেহেদি হাসান পলাশ, অধ্যাপক শামসুর রহমান শামস, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.