করোনা চিকিৎসায় অনিহা, চসিকের ১০ চিকিৎসকসহ ১১ জনকে চাকরিচ্যূত
সিটি নিউজঃ করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে অনীহা ও প্রশিক্ষণ শিবিরে অনুপস্থিত থাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১০ জন চিকিৎসক এবং একজন স্টোরকিপারকে চাকরিচ্যূত করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তিনদিন আগে নগরীর আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের একটি কমিউনিটি সেন্টারে ২৫০ শয্যার একটি আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। এ আইসোলেশন সেন্টার চালুর আগে ডাক্তারদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণে অনুপস্থিত থাকায় এবং করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে অনীহা প্রকাশ করায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওই ১০ জন চিকিৎসক এবং একজন স্টোরকিপার চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ জুন) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে ১০ চিকিৎসকসহ ১১ জনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, তারা শপথ ভঙ্গ করেছে। তাদের দায়িত্ব হল রোগীর পাশে দাঁড়ানো। এই কঠিন সময়ে তারা দায়িত্ব পালনে অনীহা প্রকাশ করতে পারেনা। সারাদেশে হাজারো চিকিৎসক মানবতার সেবায় নিয়োজিত থেকে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। চসিকের যেসব চিকিৎসক শপথ ভঙ্গ করে রোগীদের পাশে দাঁড়ানোর অনীহা প্রকাশ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের শুধু চাকরি করছেন তা নয়, দেশের অন্যান্য নাগরিকদের ন্যায় জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে তাদের উচিত ছিল মানবতার পাশে দাঁড়ানো। যারা মানবতার পাশে দাঁড়ায় না, জাতির ক্রান্তিলগ্নে পিছু হটে সেসব চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নেই।
সিটি মেয়র বলেন, চিকিৎসকদের অব্যাহতি দেয়া হলেও আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের আইসোলেশন সেন্টারের সেবা কার্যক্রম চলবে। সেখানে নতুন করে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই হাসপাতালে এক সঙ্গে ২৫০ রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। ৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়েছি। রোগীদের ওষুধ ও খাবার চসিক বহন করবে।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আক্তার চৌধুরী বলেন, ‘আমরা চিকিৎসক। আমাদের মাঝে ধনী- গরিব, মানুষ কিংবা রোগের কোনো ভেদাভেদ নেই। যে কোন রোগের চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া আমাদের প্রধান কাজ। করোনা ছোঁয়াচে রোগ। করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য আমরা আইসোলেশন সেন্টার প্রস্তুত করেছি। যাদের সেখানে পদায়ন করা হয়েছে তারা কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করেছে। তাই আমরা একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চাকরি থেকে ১০ চিকিৎসকসহ ১১ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা তো চালাইতে হবে। আমাদের আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন হয়েছে। কিন্তু চালু করতে পারিনি। ডাক্তারদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তারা সেখানেও আসেনি তাই তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নতুন করে ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ শেষে আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হবে।’
অব্যাহতি প্রাপ্ত মেডিকেল অফিসাররা হলেন, ডা. সিদ্ধার্থ শংকর দেবনাথ, ডা. ফরিদুল আলম, ডা. আবদুল মজিদ সিকদার, ডা. সেলিনা আকতার, ডা. বিজয় তালুকদার, ডা. মোহন দাশ ডা. ইফতেখারুল ইসলাম, ডা. সন্দিপন রুদ্র, ডা. হিমেল আচার্য্য, ডা. প্রসেনজিত মিত্র, এবং ষ্টোর কিপার মহসিন কবির।