চট্রগ্রামে অনলাইনের আওতায় ৪০ লাখ খতিয়ান

0

সিটিনিউজবিডি : ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু’র ফাঁসির আদেশের কপি সংরক্ষিত ছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের রেকর্ডরুমে। কিন্তু যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে না পারায় ১০৭ বছর (১৯০৮ সালের ১১ আগস্ট) আগের সেই কপিটি হস্তান্তর করা হয় কেন্দ্রীয় আর্কাইভে।

শুধু ক্ষুদিরামের ফাঁসির কপি নয়, শত বছরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে এ রেকর্ডরুমে। কিন্তু যথাযথ উদ্যোগের অভাবে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রগুলো এখন ধ্বংসের পথে।

তাই গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষণ এবং চট্টগ্রামের ১৪ জেলার ৪০ লাখ খতিয়ান অনলাইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। এর অংশ হিসেবে ডিজিটালাইজট কার্যক্রমের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (আইসিটি) রাজীব উল আহসান বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং চট্টগ্রামের ১৪ জেলার ৪০ লাখ খতিয়ান ডিজিটালাইজড করার প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের ৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৫ জন কর্মকর্তা রেকর্ডরুম সম্পর্কে ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা চট্টগ্রামের ২১৩টি ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র থেকে ২১৩ জন, ২২ জন অফিস সহকারী ও ৩০ জন আউট সোর্সার মিলে মোট ২৬৫ জনকে প্রশিক্ষণ দিবে। এরপর মূল কার্যক্রম শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘ডিজিটালাইজড করার প্রাথমিক কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। খতিয়ান ও নথিপত্র সংরক্ষণের জন্য সফটওয়ার তৈরি করা হয়েছে। সফটওয়ারটি পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজ চলছে। কিছু নথিপত্রের ডাটা ইনপুটও করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটালাইজড কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্থ না হয় রেকর্ডরুমে চারটি ওয়াইফাই যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখা ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি জরিপ ও রেকর্ড প্রণয়ন এবং সংরক্ষণ’ (প্রথম পর্যায়ে বিদ্যমান মৌজার ম্যাপ ও খতিয়ান সমুহের কম্পিউটারাইজেশন) শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে রেকর্ডরুম আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে বর্তমানে ১৯১৩ সালের পুরাতন খতিয়ানও রয়েছে। রেকর্ডরুমে রক্ষিত আছে সি এস, আর এস, পি এস, বি এস খতিয়ানের নকল, সকল ফৌজদারি এবং রাজস্ব সংক্রান্ত মামলার নকল ও বিভিন্ন আদালত হতে নিষ্পত্তিকৃত মামলার রেকর্ড। পৃথক চারটি স্থানে এগুলো রক্ষিত আছে।

কিন্তু জরাজীর্ণ, আবদ্ধ পরিবেশ, সঠিক সংরক্ষণের অভাব, রেকর্ড সমূহের অধিকাংশই অত্যন্ত পুরাতন ও ছেঁড়া মলাটের কারণে ক্রমেই ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ছে।

রেকর্ডরুম কার্যালয় থেকে জানা যায়, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের থেকে তিনজন অনলাইনে প্রতিটি খতিয়ানের লেখার নির্ভুলতার যাচাই বাছাই করবেন। তারপর সংশ্লিষ্ট সর্বোচ্চ কর্মকর্তা খতিয়ানে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে প্রতিটি খতিয়ান ডিজিটালাইজড প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন। অনলাইনে ডাটা এন্ট্রির ক্ষেত্রে প্রথমজন খতিয়ান লেখবেন। দ্বিতীয়জন তা রিভিশন দেবেন। তৃতীয়জন তা আবার যাচাই বাছাই করে দেখবেন। এক্ষেত্রে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

সহকারী কমিশনার (আইসিটি) রাজীব উল আহসান বলেন, রেকর্ডরুম ডিজিটালাইজড করা হলে ইউনিয়ন অফিস থেকে খতিয়ানের জন্য আবেদন করা, অনলাইনে টাকা জমা দেয়া, রেকর্ড সংরক্ষণ, ডাটাবেইজ তৈরি ও দ্রুত সেবা দেওয়া যাবে। তাছাড়া রেকর্ডরুমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অসাধু চক্রটি আর সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.