মেয়াদের ১দিন আগে ২ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকার বাজেট দিলেন চসিক মেয়র

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ২০২০-২১ অর্থ বছরের জন্য দুই হাজার ৪৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৪২ হাজার টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

আজ মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম ক্লাব হল রুমে চসিকের পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদের এই বাজেট ঘোষণা করেন। মেয়র হিসেবে তাঁর মেয়াদের একদিন আগে এ বাজেট ঘোষনা করলেন তিনি।

প্রস্তাবিত বাজেটে উন্নয়ন অনুদান খাতে সবোর্চ্চ আয় দেখানো হয়েছে। এই খাতে ১ হাজার ৬২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার আয় দেখানো হয়েছে। দ্ধিতীয় সর্বোচ্চ হিসেবে দেখানো হয়েছে বকেয়া কর ও অভিকর খাত।

২০২০-২১ অর্থ বছরে এই খাতে আয় দেখানো হয়েছে ১৯৯ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। হালকর ও অভিকর খাতে আয় দেখানো হয়েছে ১৪৯ কোটি ২৩ লাখ ২ হাজার টাকা।

তাছাড়া ফিস, জরিমানা, সম্পদ হতে অর্জিত ভাড়া ও আয়, ব্যাংক স্থিতি থেকে আয়, ভর্তুকিসহ নিজস্ব উৎসে প্রাপ্তি দেখানো হয়েছে ৭৬০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

এ ছাড়া ২০২০-২১ অর্থ বছরে ত্রাণ সাহায্য খাতে ৮০ লাখ ও অন্যান্য উৎস হতে প্রস্তাবিত আয় দেখানো হয়েছে ৫১ কোটি ২০ লাখ টাকা। অন্যদিকে ২০১৯-২০ সংশোধিত বাজেটে আয় দেখানো হয়েছে ৩৮৮ কোটি ৯০ লাখ ৯ হাজার টাকা। এসব আয়ের বিপরীতে নানা খাতে রয়েছে চসিকের মোটা দাগের খরচ।

চসিকের ২০২০-২১ অর্থ বছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বেতন ভাতা ও পারিশ্রমিক খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ২৯০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কল্যাণ মূলক ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তাছাড়া বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি, ডাক,তার, মুদ্রণ ও মনিহারি, ফিস বৃত্তি ও পেশাগত ব্যয়, প্রশিক্ষণ ব্যয়, প্রচারনা, ভাণ্ডার সহ ১৫ টি খাতে মোট পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫৫৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় সিটি মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম নগরবাসীর ৪১ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৬০ লাখ বাসিন্দার অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছে বৃহত্তম সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান চসিক। তাই চসিকের প্রতি নগরবাসীর অনেক প্রত্যাশা – অভিযোগ রয়েছে। সামর্থ্যর মধ্যে নগরবাসীর সেই প্রতাশা পূরণে চসিক নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে চসিকের যতটুকু সদিচ্ছা আছে ততটুকু আর্থিক সক্ষমতা নেই। আর্থিক সক্ষমতা ছাড়া নগরবাসীর শতভাগ প্রত্যাশা পূরণ করা যায় না। পৌরকরের উপর নির্ভর করে সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়।

নাগরিক সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হলে চসিকের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সেটা করার জন্য আইনি প্রক্রিয়ার যে সুযোগ তা গ্রহণের বিকল্প নেই।

এই কারণেই আইনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পৌরকর পুনর্মূল্যায়ন করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে আক্ষেপের সুরে মেয়র বলেন, কিন্তু এটা করতে গিয়ে বাধাগ্রস্ত হয়েছি এবং প্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। এতে চট্টগ্রামই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদি আমি সফল হতাম, তাহলে বর্তমানে যে রাজস্ব আদায় হচ্ছে তা দ্বিগুণের চেয়েও বেশি হয়ে যেত- ফলে প্রত্যাশিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করা সহজ হতো।

মেয়র হিসেবে মেয়াদের শেষ সময়ে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি চির ঋণী হয়ে থাকার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করছি-কেননা গত মেয়র নির্বাচনে তিনি আমাকে মেয়র পদে সমর্থন দিয়েছিলেন।

এছাড়া নগরবাসীর উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি প্রিয় নগরবাসীর কাছে, যারা আমাদের পরিষদকে এই নগরের নাগরিক সেবা ও উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন।

বাজেট অধিবেশন পরিচালনা করেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চসিক প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, প্রফেসর ড. নিছার উদ্দিন আহমদ মঞ্জু, অর্থ ও সংস্থাপন কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরন, চসিক সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া, চসিক মেজিস্ট্রেট, চসিক কাউন্সিলরবৃন্দ ও অন্যান্যরা।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.