পিছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছে খিজির খানকে

0

সিটিনিউজবিডি : বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবির) সাবেক চেয়ারম্যান খিজির খানকে মাঝারি সাইজের ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক পোচে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের পর মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের চিকিৎসক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বাড্ডা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, খিজির খানের গলার বাম থেকে ডান দিকে আনুমানিক আট ইঞ্চি লম্বা, আড়াই ইঞ্চি গভীর ও এক ইঞ্চি প্রস্থের একটি জখম রয়েছে। এ ছাড়া তার হাত-পা, বুক-পিঠ এবং নাক-কানে কোনো ধরনের আঘাত বা ক্ষতের চিহ্ন নেই। কিন্তু তার দুই চোখ বন্ধ ছিল।

গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলের আলামত ও খুনের ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, খিজির খানকে পিছন থেকে মাঝারি আকারের ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক পোচে খুন করা হয়েছে। তিনি পুরোপুরি অপ্রস্তুত ছিলেন এবং দুর্বৃত্তদের সঙ্গে কোনো ধরনের ধস্তাধস্তি হয়নি। একজন খুনীই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং বাকিরা তার সহযোগী হিসেবে ছিল। খুনী খুবই দক্ষ হাতে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, খিজির খানের গলায় সাড়ে সাত ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এবং দুই ইঞ্চি প্রস্থের একটি জখমের চিহ্ন রয়েছে। মাঝারি আকারের ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক পোচ দেওয়ায় তার গলার বড় রক্তনালী (ক্যারোটিক ভ্যাসেল) কেটে যায়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। তার শরীরে আর কোথাও কোনো ক্ষতের চিহ্ন নেই। এ ছাড়া দুর্বৃত্তদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তিরও কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর মধ্যবাড্ডার গোদারাঘাটের জ-১০/১নং বাড়ির দ্বিতীয় তলায় সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুর্বৃত্তরা বাসায় ঢুকে পরিবারের অন্য সদস্যদের হাত-পা বেঁধে খিজির খানকে গলা কেটে হত্যা করে। বাড়ির তিন তলা তছনছ করে পরিবারের অন্য সদস্যদের হাত-পা বেঁধে রাখে দুর্বৃত্তরা। ওই সাত তলা বাড়ির তিন তলায় মোহাম্মদিয়া খানকাহ শরীফের কার্যক্রম চলত। খানকাহ শরীফটির ঢাকা অফিসের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তার বেশকিছু মুরিদও রয়েছে।

রাত পৌনে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোসতাক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ঘটনার আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুই দুর্বৃত্ত খানকা শরীফে বসেন। তাদের খবর পেয়ে খিজির খান দ্বিতীয় তলায় আসেন। এ সময় তৃতীয় তলায় খিজির খানের ছেলের স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। বেশকিছু সময় জিম্মি থাকার পর ছেলের স্ত্রী নিজ হাত খুলে দ্বিতীয় তলায় এসে খিজির খানকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কিছু জামাকাপড় এলোমেলো ছিল। এ সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত চলছে। তদন্তের স্বার্থে এখন আর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.