অভয়মিত্র মহাশ্মশান, জোয়ার-ভাটা দেখে মরদেহ সৎকারঃ সংস্কারের আশ্বাস সুজনের

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের মরদেহ সৎকারের প্রধান শ্মশান বলুয়ারদীঘি অভয়মিত্র মহাশ্মশান। শর্তবর্ষী এই শশ্মান দীর্ঘকাল হতে জোয়ারের পানির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার সংকটে নিমজ্জিত।

আজ শনিবার (২২ আগষ্ট) সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন এই মহাশ্মশান পরিদর্শনে যান।

এসময় তিনি মহাশ্মশান পরিচালনা কমিটি ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। এলাকাসী প্রশাসককে জানান যে, অনেক বছর ধরে এভাবে হাঁটু সমান পানিতে মরদেহ দাহ করতে হচ্ছে তাদের। খালসংলগ্ন অভয়মিত্র মহাশ্মশানটি একটু নিচু হওয়ায় প্রতিদিনই জোয়ারের পানি উঠছে। বৃষ্টির সময় পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় দাহ করার জন্য আনা মরদেহ রাখার জায়গা থাকে না।

অনেক সময় জোয়ার-ভাটা দেখে মরদেহ সৎকারের সময় নির্ধারণ করতে হয়। অভয়মিত্র মহাশ্মশানে জোয়ারের পানির কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ জরুরী। চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন সার্বিক পরিস্থিতি ও পানি উঠার কারণ নির্ণয় করে বলেন, মাটি ভরাট করে অভয়মিত্র মহাশ্মশান উঁচু করা হলে জোয়ারের পানি আর এই স্থানে প্রবেশ করতে পারবে না।

জলাবদ্ধতা না থাকলে সনাতন সম্প্রদায় তাদের আপনজনের মৃতদেহ সৎকার যথাযথ ধর্মীয় নিয়মনীতি অনুসরণ করে নিরাপদে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে। এজন্য তিনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত এই মহাশ্মশানের জন্য ত্বরিৎ পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষনা দেন।

তিনি বলেন, গতকাল আমাদের সাবেক মেয়র আলহাজ্ব এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এই মহাশ্মশানের জন্য অনুদান পাঠিয়েছেন। আগামীতে বলুয়ারদীঘি অভয়মিত্র মহাশ্মশানের সার্বিক উন্নয়নেও তিনি পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

আমাদের সাবেক মেয়র আলহাজ্ব এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী থাকলে হয়তো এতদিনে এই দূদর্শা থাকতো না। তিনি অনেক আগেই এই মহাশ্মশানের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন। যে অনুদান পাওয়া গেছে তাতে সাময়িক কষ্ট লাঘব হলেও এর জন্য চাই পরিকল্পিত ও কার্যকর পদক্ষেপ।

প্রশাসক বলেন, যেহেতু মহাশ্মশানটি সিটি করপোরেশনের পরিচালনাধীন। তাই একটি সুন্দর পরিকল্পিত মহাশ্মশান করার জন্য আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নেব। এ মহাশ্মশানের উন্নয়নের জন্য যা যা করা প্রয়োজন তাই করবো আসরা। এজন্য সব মহলের মতামত ও পরামর্শ নেয়া হবে। আমাদের এমনভাবে মহাশ্মশানটি সংস্কার করতে হবে যাতে পাশের এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

তিনি দু:খ প্রকাশ করে বলেন, আমরা দেখেছি মহাশ্মশান উঁচুকরণ ও সংস্কারের জন্য প্রতি বছর নানা উদ্যোগ হাতে নেয়া হতো। কিন্তু বাস্তবায়ন কিছুই হয় না। মহাশ্মশানের পেছনে বয়ে যাওয়া চাক্তাই খালে স্লুইসগেট স্থাপন করলে জোয়ারের পানি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এতে করে জোয়ারের সময় স্লুইসগেট বন্ধ করা হলে শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারে জলদুর্ভোগ সমস্যা নিরসন হয়ে যেতো। তবে এখন আর সময় নষ্ট করার সময় নাই। আশা করছি খুব শীঘ্রই মহাশ্মশানটির উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করব।

এসময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুল হুদা, অভয়মিত্র মহাশ্মশান পরিচালনা কমিটির সভাপতি, সাবেক কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কিশান চৌধুরী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর পেয়ার মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব সিদ্দিকী, এডভোকেট তপন দাশ, কাউন্সিলর প্রার্থী রুমকী সেন গুপ্ত, ইঞ্জিনিয়ার আশুতোষ দাশ, অজয় বনিক উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.