সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুঃ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক

0

সিটি ন্নিউজ ডেস্কঃ ফেরার দেশে চলে গেলেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী। (ইন্না –রাজিউন)। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাস্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আবু ওসমান চৌধুরীর অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। রাষ্ট্রপতি মরহুম আবু ওসমানের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

অপর এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আবু ওসমানের বীরত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা বাস্তবায়ন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে এ বীর সেনানীর অনবদ্য ভূমিকা সবসময় আমাদের প্রেরণা যোগাবে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আজ শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বাধীনতা পদকে ভূষিত এ মুক্তিযোদ্ধা মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

এর আগে রবিবার দুপুরে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আবু ওসমান চৌধুরী বার্ধক্যজনিক নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। পরে তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি বর্তমানে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহ-সভাপতি।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আবু ওসমান চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মেজর পদে কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট-এর সংবাদ পেয়ে ২৬ মার্চ সকালে বেলা ১১টায় তিনি চুয়াডাঙার ঘাঁটিতে পৌঁছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সসৈন্য যোগ দেন।

এর আগে ১৯৭১ সালের ৬ মার্চ আবু ওসমান চৌধুরী পদ্মা মেঘনার ওপারে কুষ্টিয়া থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গণ নামকরণ করে সে রণাঙ্গণের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন। পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার তাকে দক্ষিণ পশ্চিমাংসের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন।

মে মাসের শেষার্ধে প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনকে দুই ভাগ করে ৮নং ও ৯নং সেক্টরদ্বয় গঠন করেন এবং ৮ নং সেক্টরের দায়িত্বে আবু ওসমানকে নিয়োগ করা হয়। প্রাথমিকভাবে সে সময় ওই সেক্টরের অপারেশন এলাকা ছিল কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর ও পটুয়াখালী জেলা।

মে মাসের শেষে অপারেশন এলাকা সংকুচিত করে কুষ্টিয়া ও যশোর, খুলনা জেলা সদর, সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ নিয়ে এই এলাকা পুনর্গঠন করা হয়। এই সেক্টরের প্রধান ছিলেন আবু ওসমান চৌধুরী এবং পরে মেজর এম এ মঞ্জুর। তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‌’এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১)’।

মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার আবু ওসমান চৌধুরীকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করেছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.