চট্টগ্রামে কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গৃহবধূর আত্মহত্যা

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারীতে এনজিও’র কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে রূপনা শর্মা (৩৮) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন।এদিকে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো ক্ষুদ্রঋণ সংস্থার ঋণ নিয়ে রয়েছেন চরম বিপাকে।সপ্তাহ ও মাস শেষেই ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ থাকে। করোনার কারণে জীবিকা হারিয়ে অনেকে বাধ্য হয়েই নিয়েছিলেন ঋণ। করোনা মহামারী পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হতেই মাথায় চেপে বসেছে সেই ঋণের বোঝা পরিবারের মাঝে।

সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে তার নিজ ঘরে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।নিহত রূপনা উপজেলার উত্তর মেখল মোজাফফরপুর এলাকার রশিক ডাক্তার বাড়ির বাসিন্দা ও নাপিত অরুন কুমার শর্মার স্ত্রী।

নিহত রূপনার স্বামী অরুন কুমার শর্মা বলেন, আগে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করলেও করোনা মহামারির কারণে নিয়মিত কাজ না থাকায় সঠিক সময়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হন। পরে সরকারিভাবে ঋণের কিস্তি সংগ্রহে বিধি-নিষেধ আসায় রূপনা শর্মা আর কোনো কিস্তি দিতে পারেননি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে রূপনা শর্মাকে প্রতিদিন কিস্তি দিতে হতো। প্রায় ৮ লাখ টাকা কিস্তি ও ঋণ থাকায় মানসিকচাপে সে আত্মহত্যা করে।

নিহতের বড় মেয়ে জবা শর্মা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মা অতিরিক্ত ঋণের টাকা শোধ করতে না পারার কারণে গলায় ফাঁস দেন। রাতে আমরা একসঙ্গে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আমার মা ছোট ভাইকে নিয়ে অন্য রুমে ঘুমায়। বাবা প্রতিদিনের মত নিচে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মায়ের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এদিকে স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সেলুনে কর্মচারী ওই এলাকার অরুন কুমার শর্মার স্ত্রী ১৯ ও ১৪ বছরের দুই মেয়ে এবং ৭ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তানসহ মোট ৩ সন্তানের মাতা রুপনা শর্মা সংসারের প্রয়োজনে ৭টি এনজিও(গ্রামীন, ব্রাক, আশা, সাজেদা, ঘাসফুল, প্রত্যাশা, মুক্তিপথ)এবং বিভিন্নজন থেকে ৮ লক্ষাধীক টাকা ঋণ নেয়। বর্তমানে করোনা পরিস্থির কারণে স্বামীর আয়-রোজগার ঠিকমতো না হওয়ার ফলে ঋণের কিস্তির টাকা যথাসমযে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় রুপনা শর্মা। এদিকে এনজিওগুলো রুপনা শর্মাকে ঋণের কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিলে তিনি টাকা জোগাড় করতে না পারায় মানষিক দুশ্চিন্তায় পড়ে সবার অজান্তে ঘরের চালের সাথে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। 

খবর পেয়ে দুপুরের দিকে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাত রিপোর্ট তৈরী করে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে।

হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক ভাবে এটা আত্নহত্যার ঘটনা মনে হচ্ছে তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.