বিচারপতি সিনহা সরকার প্রধান হওয়ার খায়েশ করেছিলেন
জুবায়ের সিদ্দিকী, সিটি নিউজঃ দশম জাতীয় সংসদকে অবৈধ ঘোষণার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতে সাংবিধানিক ক্যু করতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এর মাধ্যমে নিজে সরকার প্রধান হতে চেয়েছিলেন সাবেক এই প্রধান বিচারপতি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিচারপতি সিনহার বিষয়ে তদন্ত করে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। বিচারপতি সিনহা ২০১৮ সালের ২৬ মে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের জন্য আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে তার জীবন হুমকির মুখে। সেখানে গেলে তাকে হত্যা করা হবে। অথবা তার মানবাধিকার লুন্ঠিত হবে।
বিচারতি সিনহার এই আবেদন যাচাই বাছাই করতে গিয়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সদস্যরা সন্ধান পায় চাঞ্চ্যকর তথ্য।
গত ২৮ জুলাই হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তার সম্পর্কে ২০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন আবেদনটি নিস্পত্তি করেনি।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিচারপতি সিনহার ব্যাপারে রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন, ২০১৫ সালের ১৭ জানুয়ারী বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তবে সিনহা অনেক আগে থেকেই একজন দুর্নীতিবাজ বিচারক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকার বিচার বিভাগকে দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে সুপ্রীম কোর্টে বিচারপতিদের মধ্যে দুর্নীতিবাজদের একটি তালিকা হয়েছিল। সেই তালিকায় দুর্নীতিবাজ হিসেবে সিনহার নাম ছিল।
ড. কামাল হোসেনের অনুকম্পায় সেই সময় তিনি রক্ষা পান। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট পিটিশন করা হয়। যা হাইকোর্ট বিভাগ খারিজ করে দেয়। এসময় হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে এক লিভ টু আপীলের আবেদন সুপ্রীম কোর্টে জমা পড়ে।
বিচারপতি সিনহার এই বিষয় নিয়ে লন্ডনে ২টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র গোয়েন্দা বিভাগ নিশ্চিত করেছে উক্তি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রথমসারীর গুরুত্বপূর্ণ দুটি পত্রিকার সম্পাদক ও কয়েকজন সাবেক আমলা সিনহাকে প্ররোচিত করেছিলেন যে, এই মামলায় সংসদ অবৈধ ঘোষিত হবে এবং সিনহা সরকারের প্রধান হতে পারবেন।
উক্ত রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়, বিচারপতি খায়রুল হক প্রদত্ত তত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত রায়কেও অবৈধ ঘোষণা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। সিনহা গং এর চক্রান্ত অবহিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।
বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে অবৈধ আয় ও সম্পদসহ বিদেশে বিলাসবহুল বাড়ীর সন্ধান পেয়েছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন এই নষ্ট ও বিতর্কিত দুর্নীতিবাজ বিচারপতির অবৈধ আয় ও সম্পদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিনহার রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মার্কিন সরকার।