বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কারণে ধর্ষণ বাড়ছে,প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সমাবেশ

ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনসহ সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্নস্থানে সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকবৃন্দ।বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কারণে ধর্ষণ বাড়ছে বলে সমাবেশ থেকে ধর্ষকদের বিচারের আওতায় আনতে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।

সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাংবাদিক প্রিতম দাশের সঞ্চালনায় সোমবার (৫ অক্টোবর) ৩টা থেকে চট্টগ্রাম নগরের চেড়াগী মোড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কবি ও কলামিস্ট কামরুল হাসান বাদল,বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নারী নেত্রী সিতারা শামীম, সাংস্কৃতিক সংগঠক সুনীল ধর, সাংবাদিক আহমেদ মুনীর ও সৌমেন ধর, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, শ্রমিক নেত্রী বাপ্পী দেব বর্মণ, সাবেক ছাত্রনেতা নাজিম উদ্দিন, সিইউজে’র সাংবাদিক নেতা মহররম হোসাইন ও লতিফা আনসারী রুনা,সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার, হিউম্যানিটি ফার্স্ট মুভমেন্টের মিলন দত্ত ও আবৃত্তি শিল্পী প্রণব চৌধুরীসহ অংশ নেন ছাত্র-জনতা ও পেশাজীবী মানুষ।

সমাবশে অংশ নিয়ে গণজাগরণমঞ্চ চট্টগ্রামের সমন্বয়ক শরীফ চৌহান বলেন, ‘বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণেই আজ দেশব্যাপী ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়ে গেছে। তাই ধর্ষকদের বিচারের আওতায় আনতে আলাদা ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। ধর্ষকদের কোনোভাবেই জামিন দেয়া যাবে না। আইনের হাতকে কঠোর হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী তিন পার্বত্য জেলা, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ও সর্বশেষ গণমাধ্যমে নোয়াখালীতে মধ্যযুগীয় বর্বর যে আচরণ সেটাও প্রত্যক্ষ করলাম। সেজন্য আজকে আমরা একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এখন থেকে যেখানেই ধর্ষণ, সেখানেই সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কোনো শক্তির কাছেই আপস করা যাবে না।

চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রুনা বলেন, ‘আমি একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছি। আজ আমি তার চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছি। আপনারা যারা পুরুষ, যারা এখানে এসেছেন তাদের চোখে চোখ রাখতে লজ্জা পাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ধর্ষকদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে করতে হবে। এক সপ্তাহের মধ্যে যাতে ধর্ষকদের বিচার করা যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে, প্রয়োজনে তাদের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।এ সময় তিনি ধর্ষকদের ছবি বেশি করে প্রচারের জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যাতে এসব ধর্ষকরা আর কখন ওই সমাজে ফিরতে না পারে, তাদের মা-বোনোরাও যাতে তাদের দেখে লজ্জা পায়।

নারীনেত্রী বাপ্পী দে বলেন, ‘আমাদের দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা আজ এতটাই ডিজিটাল যে, বাংলার নারীরা আজ ডিজিটালেই ধর্ষিত হচ্ছে। নারীরা সব ক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতায় এগিয়ে গেলেও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে গেছে বহুদূর।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘মাননীয় সরকারপ্রধান, এই কুলাঙ্গারগুলো কার আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে আছে আমরা জানতে চাই না। কে কোন পার্টি করে, কে কোন লীগ তা আমরা শুনতে চাই না। আমরা তাদের বিচার চাই।

আবৃত্তি শিল্পী ও প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান বলেন, ‘আমাদেরকে বারবার বলা হচ্ছে নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, কিন্তু প্রান্তিক মানুষগুলো যদি এর সুফল ভোগ করতে না পারে, তাহলে এ কেমন ক্ষমতায়ন। রাষ্ট্রকে তার ব্যর্থতার কথা স্বীকার করতে হবে। ধর্ষকদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। আমরা ধর্ষকদের সমাজ থেকে বয়কট করতে পারিনি বলেই তারা বারবার আমাদের মাঝেই এসব ঘটনা নিয়ে হাজির হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘উন্নতির মাপকাঠি কি শুধুই কয়েকটি দালান কোঠা আর অবকাঠামো? সমাজের প্রান্তিক মানুষরা, নারীরা যদি বলেন তারা আমাদের মাঝে নিরাপদ নন; তবে এ কেমন উন্নয়ন?’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.