সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস অপরিহার্য
এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের ক্যাম্পেইনে বক্তারা
সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকব বেশ, গড়তে চাই সুন্দর পরিবেশ’, ‘হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ুন, সুস্থ দেহে নীরোগ থাকুন” স্লোগানে স্লোগানে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচী পালন করল।
গত ১৪ ও ১৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানাধীন ঝাউতলা বাজার সংলগ্ন ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি এলাকাসহ নগরীর বেশকয়েকটি বস্তি এলাকায় সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন ও হাত ধোয়ার সাবানসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ বিতরণ করে এসডিজি ইয়ুথ ফোরাম। নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস ও সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য প্রতিবছর ১৫ই অক্টোবর বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপিত হয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য হাত স্বাস্থ্যকরণ’। এই বছরের প্রতিপাদ্য স্বাস্থ্যকর ভবিষ্যতের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার অনুশীলনের উপর গুরুত্বারোপ করে।
সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনে এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহারের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুর রহমান শিহাবের সঞ্চালনায় হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম প্রদর্শন, সচেতন করণ ও হাত ধোয়ার সাবানসহ আনুষঙ্গিক উপকরণ বিতরণ কর্মসূচী উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএসটিসি’র প্রাক্তন উপাচার্য ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডাঃ প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া। প্রধান বক্তা ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কোতোয়ালি জোনের কর্মকর্তা মোঃ জাহান উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ট্রাভেল এন্ড লজিস্টিক বিভাগের ম্যানেজার শেখ ইমরান হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন ওব্যাট হেল্পার্সের প্রোগ্রাম ম্যানেজার সোহাইল আক্তার খান, লেখক ও সমাজকর্মী এ.আর. বাহাদুর বাহার, ভলেন্টিয়ার ফর বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি মোঃ শওকত আরাফাত, তারুণ্যের প্রতীক বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জি.এম. তাওসীফ, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আহসান উল্লাহ খান, চন্দনাইশ ছাত্র সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান হৃদয়, ওব্যাট প্রাইমারী স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ইসরাত পারভীন, ওব্যাট থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কর্ণফুলীর সভাপতি মোঃ ইমরান প্রমুখ।
প্রফেসর ডাঃ প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, প্রতিনিয়তই আমরা অপরিষ্কার হাত দিয়ে আমাদের চোখ, নাক স্পর্শ করে থাকি। এতে আমাদের হাতের জীবাণু দেহে প্রবেশ সহজ হয়ে যায়। অপরিচ্ছন্ন হাত দিয়ে খাবার প্রস্তুত বা খাওয়া অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস। টয়লেট ব্যবহারের পর ঠিকভাবে হাত পরিষ্কার না করা নানা অসুখের কারণ। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা জরুরী আর হাত স্বাস্থ্যকরণ এজন্য অত্যাবশ্যক।
চৌধুরী ফরিদ তার উদ্বোধনী বক্তব্যে এমন ঘনবসতিপূর্ণ ও নগরীর মধ্যে পিছিয়ে পড়া বস্তি এলাকাকে কর্মসূচীর স্থান হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য শুরুতে এসডিজি ইয়ুথ ফোরামকে সাধুবাদ জানায়। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষার অংশ হিসেবে নিয়মিত হাত ধোয়ার ব্যাপারে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।
মোহাম্মদ জাহান উদ্দীন এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের মত যুব সংগঠনের প্রশংসা করে বলেন করোনকালীন এই সংগঠন যেভাবে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে ব্রতী ছিল তা অনন্য। হাত ধোয়া কর্মসূচীর দুইদিন ব্যাপী কার্যক্রম পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোর জনগোষ্ঠীর মাঝে সচেতনতা জাগ্রত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
নোমান উল্লাহ বাহার সভাপতির বক্তব্যে বলেন কোভিট-১৯ মহামারী সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছে যেকোন ধরণের ভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধ করতে এবং সার্বিকভাবে সুস্বাস্থ্যে রক্ষার অন্যতম সহজ উপায় হ্যান্ড-ওয়াশিং।
বক্তারা আরো বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছে বিশ্বব্যাপী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত চূড়ান্ত ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত মাস্ক ব্যবহার করা ও নিয়মিত হাত ধোয়ায় একমাত্র ভ্যাকসিন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার করোনা পরিস্থিতির ফলে হাত ধোয়া ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি গণমাধ্যমসহ সর্বত্র ব্যাপকভাবে প্রচারিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দুই দিনব্যাপী কর্মসূচীতে নগরীর বিভিন্ন জরাজীর্ণ ঘনবসতিপূর্ণ বস্তি এলাকার পরিবারের মাঝে হাত ধোয়ার সাবান ও মাস্ক বিতরণ করা হয়। করোনা মহামারির প্রতি বিশেষ সতর্ক থেকে ও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচীতে অংশ নেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। করোনাকালীন এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসের ব্যতিক্রমী এমন কর্মসূচীতে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার জীর্ণ শীর্ণ মানুষগুলোর মুখে উৎসাহের হাসি ফুটতে দেখা যায়।