চসিক নির্বাচনঃ আলোচনায় ওরা ১১ জন

0

সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচন থেকে সরে যেতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা কেন্দ্রের হুশিয়ারী আমলে নিচ্ছেন না। নির্বাচনের মাঠে প্রত্যেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছেন। তাদের অভিযোগ,’ অনেক ওয়ার্ডে ত্যাগী পরীক্ষিত নেতাকে বাদ দিয়ে বিতর্কিত ও হাইব্রিড নেতাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। যে কারণে তৃনমুলের নেতাকর্মীদের অনেকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া বিতর্কিতদের পক্ষে নেই। অনেক ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেছে।

দলের মনোনিত প্রার্থী এবং মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তারা। যে কারনে বিদ্রোহীদের অনেকেই দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তন কিংবা পুন:বিবেচনার জন্য কেন্দ্র থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মনোনয়ন প্রত্যাশী কিংবা বিদ্রোহী প্রার্থীদের কোন আবেদন তিনি আমলে নিচ্ছেন না বলে জানা গেছে।

এর মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন,’ চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে যারা প্রার্থী হবেন এবং বিদ্রোহী প্রার্থীতের পক্ষে যারা কাজ করবেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে দলের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর। এমন হুশিয়ারীর পরও নির্বাচনী লড়াই থেকে পিছু হটতে রাজি নন বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তাদের মতে, ’বিগত দিনে বিএনপি-জামাত জোট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সাহসী ভুমিকা ও কাউন্সিলর হিসেবে পাঁচ বছরে ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড করেছেন তারা। কিন্তু অনেক ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী হিসেবে অনেক দুর্বল ও অপরিচিত মুখ মনোনয়ন পেয়েছে। যে কারনে দলের তৃনমুল নেতাকর্মী, ভোটার ও সমর্থকদের দাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা মাঠে আছেন।

তাদের মতে সুষ্ট ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সদ্য সাবেক কাউন্সিলরদের অনেকে নিজের বিজয় সুনিশ্চিত বলে দাবী করেন। চসিক নির্বাচন আগামী ২৭ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় সুত্র জানায়, মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। কিন্তু ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৫টিতে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। কোন কোন ওয়ার্ডে একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন।

সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কয়েকটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। সব মিলিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা শতাধিক। বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ১১জন সদ্য সাবেক কাউন্সিলর বেশ আলোচনায় আছেন। দলের সমর্থন এরার পাননি তারা। তবে এলাকায় তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। মনোনয়ন বঞ্চিত সদ্য সাবেক কাউন্সিলররা হলেন, ১১নং দক্ষিণ পাহাড়তলীর তৌফিক আহমদ চৌধুরী, ৯নং উত্তর পাহাড়তলীর জহুরুল আলম জসিম, ২নং জালালাবাদ ওয়ার্ডের সাহেদ ইকবাল বাবু, ১০ নং দক্ষিন কাট্টলী ওয়ার্ডের মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, ১২নং সরাইপাড়ার সাবের আহমদ, ১৪নং লালখান বাজারে এফ কবির মানিক, ২৫নং রামপুরা ওয়ার্ডের এস এম এরশাদ উল্লাহ, ২৭নং দক্ষিন আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের এইচ এম সোহেল, ২৮ নং পাঠানটুলী ওয়ার্ডের আব্দুল কাদের ও ৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের হাসান মুরাদ। জানা গেছে, মনোনয়ন বঞ্চিত এসব সদ্য সাবেক কাউন্সিলর এক সময়ের ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা।

বিএনপি জামাত জোট আমলে অনেকে মিথ্যা মামলায় কারাবরন করেন। তবে তাদের অভিযোগ, ভোটে জনপ্রিয়তার পরীক্ষা হোক। কিন্তু ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনি মাঠ থেকে বাইরে রাখার চিন্তা হচ্ছে দলের জন্য ক্ষতিকর। যা তৃনমুল নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিবেন না। অপরদিকে দল সমর্থিত প্রার্থীদের অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাদের মতে,’ বর্তমান সরকারের সময়ে চট্টগ্রামে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে, তার জনসমর্থন দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে আসবে।
জু,সি-২৭/১২/২০২০

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.