চসিক নির্বাচন: ১৪টি ওয়ার্ড ঝুঁকিপূর্ণ

0

সিটি নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ। উৎসবমুখর নির্বাচন হয়ে উঠছে সংঘাতময়। প্রার্থীদের মধ্যে চলছে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ। ইতোমধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ গেছে ৩ জনের। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। অস্ত্রের ব্যবহারও দেখা গেছে। করোনার কারণে চসিক নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে গত বছরের ১৮ মার্চ রাতে সরাইপাড়া লোহারপুল এলাকায় ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোরশেদ আকতার চৌধুরীর নির্বাচনী কার্যালয়ে খুন হন আনোয়ার জাহের তানভীর (৪৫) নামে একজন। ১২ জানুয়ারি পাঠানটুলিতে প্রতিপক্ষের গুলিতে মারা যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের সমর্থক আজগর আলী বাবুল। ৮ জানুয়ারি দেওয়ানবাজার এলাকায় ছুরিকাঘাত করা হয় রোহিত নামে এক ছাত্রলীগকর্মীকে। ১৫ জানুয়ারি তিনি মারা যান। গত শনিবার লালখান বাজারে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ১১ জন আহত হয়। বাকলিয়ার বাস্তুহারা ও চান্দগাঁও থানার বারইপাড়া এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ১৪টি ওয়ার্ড সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। এগুলো হলো ১ নম্বর পাহাড়তলী, ২ নম্বর জালালাবাদ, ৪ নম্বর চান্দগাঁও, ৯ নম্বর পাহাড়তলী, ১০ নম্বর কাট্টলী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া, ১৪ নম্বর লালখান বাজার, ২৩ নম্বর পাঠানটুলি, ২৭ নম্বর উত্তর হালিশহর, ২৮ নম্বর মোগলটুলি, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩১ নম্বর আলকরণ, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গিবাজার এবং ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড। নির্বাচনে এসব ওয়ার্ডে সহিংসতা বাড়তে পারে। তাই এলাকার সাধারণ মানুষ শঙ্কিত। এ অবস্থায় সাধারণ ভোটাররা বুঝতে পারছেন না তারা ভোট দিতে যাবেন কিনা। গেলেও পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন কিনা। এদিকে, গতকাল চকবাজার রাহাত্তারপুল এলাকায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের গণসংযোগে নগর ছাত্রদলের দুই গ্রুপে হাতাহাতি হয়েছে। এতে নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম ও সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহিন হেনস্থার শিকার হন।

নির্বাচনী লড়াইয়ে বেশ ক’জন অভিযুক্তের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী প্রার্থী হওয়ায় এ শঙ্কা আরও বাড়ছে। মূলত কাউন্সিলর পদ নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভক্ত আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের শক্তি প্রদর্শনের মহড়া দলটির নেতাকর্মীদের উদ্বিগ্ন করছে। সমপ্রতি পুলিশের অভ্যন্তরীণ একটি প্রতিবেদনেও ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে কোন্দল এবং দল সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে সংঘাতের আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। সবকিছু ভোটারদের মনে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার সালেহ্‌ মোহাম্মদ তানভীর বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এটা অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জের। তবে নির্বাচন নিয়ে আমাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে। আমরা অবশ্যই পেশাদারত্বের সাথে কাজ করব। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা সৃষ্টিকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, হোক সে বহিরাগত কিংবা স্থানীয়। ১২ জানুয়ারি পাঠানটুলিতে আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি ঘটনা ঘটেছে, আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বিন্দুমাত্র সময় নিইনি। কাজের মাধ্যমে আমরা আমাদের শক্ত অবস্থান প্রমাণ করব।
তিনি বলেন, যেসব এলাকায় সংঘর্ষের আশঙ্কা আছে, সেসব এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। টহল টিম কাজ করছে। নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চলছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.