এক সময় বেঁচে থাকার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন মেগান !

0

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ব্রিটিশ রাজপরিবারে বর্ণবাদের বর্ণনা দিয়ে ডাচেস অব সাসেক্স মেগান বলেছেন, ব্রিটিশ রাজপরিবারে তাঁর জীবন এতো বেশি কঠিন হয়ে পড়েছিল যে এক সময় ‘তিনি আর বেঁচেই থাকতে চাননি’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান এ কথা জানিয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টিভি ব্যক্তিত্ব অপরাহ উইনফ্রে’র সঙ্গে সম্প্রতি একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কল দম্পতি। যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় রোববার রাতে তা প্রচারিত হয়। সিবিএসের দুই ঘণ্টার এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যে আজ সোমবার আইটিভিতে সম্প্রচারিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সাক্ষাৎকারে এই দম্পতি বর্ণবাদ, মানসিক স্বাস্থ্য, গণমাধ্যমের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এবং রাজপরিবারের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

মেগান মার্কল বলেছেন, “রাজপরিবারের অভ্যন্তরে থাকাকালে তিনি সাহায্য চেয়ে পাননি। সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল যখন রাজপরিবারের এক সদস্য হ্যারিকে তাদের ছেলের গায়ের রং নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন যে সে ‘কতটা কালো’ হতে পারে।”

প্রিন্স হ্যারিও বলেছেন যে তিনি যখন সরে আসতে চেয়েছিলেন, তখন তাঁর বাবা প্রিন্স চার্লস তাঁর ফোন ধরাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তারা জানান যে, আসছে গ্রীষ্মে তাঁরা আবার বাবা-মা হতে যাচ্ছেন এবং এই সন্তানটি একটি মেয়ে।

২০২০ সালের মার্চে রাজ পরিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের পর এই দম্পতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গিয়ে থাকতে শুরু করেন। গত মাসেই তাঁরা ঘোষণা দেন যে রাজপরিবারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য হিসেবে তাঁরা আর ফিরবেন না।

মেগান বলেন, ‘এক সময় আমি একাকি বোধ করতাম, যখন আমাকে বলা হয়, আমি কী করতে পারব আর কী করতে পারব না। এমন এক সময় দাঁড়ায় যখন আমি মাসের পর মাস বাড়ি থেকে বের হইনি।’

অপরাহকে মেগান বলেন, তিনি এক সময় ভাবতে শুরু করেন এর চেয়ে বেশি একা হওয়া সম্ভব নয়। অপরাহ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, একপর্যায়ে গিয়ে তিনি নিজের ক্ষতি করার বা আত্মহত্যার চিন্তা করেছিলেন কি না? জবাবে মেগান বলেন, ‘হ্যাঁ। এটা খুব বেশি স্পষ্ট ছিল। খুব স্পষ্ট এবং ভয়ংকর। সে সময় বুঝতে পারছিলাম না যে কার কাছে যাব।’

মেগান বলেন, গর্ভবতী থাকা অবস্থায় হ্যারির সঙ্গে রয়াল অ্যালবার্ট হলে এক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময়কার এক ছবির কারণে ‘আতঙ্কবোধ’ করেছিলেন তিনি। অপরাহ মেগানকে জিজ্ঞেস করেন, রাজপরিবার কেন তাঁর ছেলে আর্চিকে প্রিন্স ঘোষণা করেনি।

১৯১৭ সালের একটি আইনের কারণে ডিউক এবং ডাচেস অব সাসেক্সের সন্তানরা স্বাভাবিকভাবেই প্রিন্স কিংবা প্রিন্সেস হবেন না, যদি না রাণী স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কোনো পদক্ষেপ নেন।

মেগান বলেন, ‘আমার গর্ভবতী থাকার মাসগুলোতে আলোচনা চলছিল যে তাকে সুরক্ষা দেওয়া হবে না, তাকে হয়তো কোনো পদবি দেওয়া হবে না এবং জন্মের পর তার ত্বক কতটা কালো হবে তা নিয়েও উদ্বেগ এবং আলোচনা চলেছে।’

অপরাহ জিজ্ঞেস করেন তাঁর সন্তান যদি ‘বেশি বাদামি বর্ণের’ হয় এবং তা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে কিনা, এ নিয়ে কোনো উদ্বেগ তাদের ছিল কিনা। মেগান বলেন, ‘এটা যদি আপনার অনুমান হয়ে থাকে, তাহলে সেটি বেশ নিরাপদ অনুমানই মনে হচ্ছে।’ এ ধরনের মন্তব্য কে করেছিলেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে মেগান তা জানাননি। মেগান বলেন, ‘আমার মনে হয় এটা তাদের জন্য খুব ক্ষতিকর হবে।’

হ্যারিও সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে অসম্মতি জানিয়ে বলেন, ‘ওই বিষয়টি আমি কখনোই কাউকে বলব না। তখন এটা বেমানান ছিল এবং আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। গণমাধ্যমের কাছ থেকে মেগান যে ধরনের বর্ণবাদের শিকার হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে কোনো স্বজনই মেগানের পক্ষে কথা বলতে এগিয়ে আসেননি।’

হ্যারি বলেন, ‘ওই তিন বছরে আমার পরিবারের কেউই কোনো কথা বলেনি। এটা কষ্টকর।

সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.