নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

0

সিটি নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। সব অনুষ্ঠান সতর্কতার সঙ্গে করতে হবে। এর আগে মানুষের পাশে যেমন দাঁড়িয়েছিলেন তেমনভাবে আবার দাঁড়াতে হবে। খাদ্য, মাস্ক, স্বাস্থ্যসুরক্ষার সামগ্রীসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। সবাইকে প্রস্তত থাকতে হবে।

রোববার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা যা করার করবো। কিন্তু দল হিসেবে আওয়ামী লীগকেও মানুষের পাশে থাকতে হবে। যে দল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। আমার দেশের একটা মানুষও যেন কষ্টে না থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সারাবিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানরা শুভেচ্ছা দিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য সম্মানের, এটাই আমাদের সার্থকতা। তবে আমাদের যাত্রা অনেক দূরের, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠন করতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। আমরা উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। এটাই জাতির পিতার স্বপ্ন। তার স্বপ্নের ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ব, এটাই প্রতিজ্ঞা।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পাঁচ দেশের প্রধানরা বাংলাদেশে এসেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে শুভেচ্ছা বার্তা আমরা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। এটাই আমাদের সার্থকতা।

তিনি বলেন, সময়ের অভাবে বিদেশিদের সব বার্তা শোনাতে পারিনি। সব বার্তা সংরক্ষণে আছে। এসব তৃণমূল পর্যন্ত প্রচার করতে হবে। তাদের শুভেচ্ছা বার্তা যেন জনসাধারণ জানতে পারে। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনকে এগুলো প্রচার করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবুজ বাংলা আরও সবুজ করতে চারা রোপণ করতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কোনো জলাশয় যেন অনাবাদি না থাকে। খাদ্য উৎপাদন করে নিজেদের প্রস্তুতি রাখতে হবে। করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় বলা যায় না। যাতে অন্তত খাদ্য সংকট না হয়। আমরা নিজের খাদ্য নিজেই জোগান নিশ্চিত করে অন্যকে দেবো।

সরকার প্রধান বলেন, ভ্যাকসিন দেয়া অব্যাহত থাকবে। তবে কেউ যাতে মাস্ক ছাড়া বাইরে বের না হয়। নিরাপদ দূরত্ব মেনে বসতে হবে। সভা-সেমিনার-কর্মশালা স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে করতে হবে। যতদূর সম্ভব খোলা জায়গায় কর্মসূচি করতে হবে। ঘরের মধ্যে করলে করোনার প্রাদুর্ভাব আরও বেশি দেখা দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমাদের প্রতিজ্ঞা হলো, বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা সেই ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু তার সংবিধান ও আইনে যে মৌলিক নির্দেশনা রেখে গেছেন, আমরা সে আলোকেই পথ চলছি। তার সব কাজ পূর্ণ করছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ বছর দেশ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। ৭ মার্চের ভাষণও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। বাংলাদেশকে ভিন্ন খাতে নেওয়া হয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছিলাম। তারপরও চক্রান্ত থামেনি। ২০০১-এ আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। কিন্তু ফল ভালো হয়নি। পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। বিভিন্ন খাতে পিছিয়েছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, আমাদের শাসনামলে গত ১২ বছরে বাংলাদেশের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছি। এত সব অর্জনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শই কারণ। এটা নতুন কিছু না, কোনো ম্যাজিকও না। এদেশের মানুষ জাতির পিতার নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধ করে। ৭ মার্চের ভাষণে যা যা করতে বলেছেন, মানুষ তাই করেছিল।

তিনিই বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়া রাখতে পারবা না। আসলেও দাবায়া রাখা যায়নি, যাচ্ছে না। আমরা তার আদর্শে দেশ পরিচালনা করে এগিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ প্রমুখ।

সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.