বাংলাদেশে প্রতিবছর জন্মের পর মারা যায় ৬২ হাজার শিশু

0

সিটি নিউজঃ নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কীয় বিভাগীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা নগরীর সিনেমা প্যালেস সংলগ্ন লয়েল রোডস্থ বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনএইচপি এন্ড আইএমসিআই প্রোগ্রাম কর্মশালার আয়োজন করেন।

সেভ দ্যা চিলড্রেন-এর মাধ্যমে বাস্তবায়িত ইউএসএইড’স মা-মনি এমএনসিএসপি চট্টগ্রাম বিভাগের ৬টি জেলায় মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে ওতপ্রোতভাবে কাজ করছে।

বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরের সভাপতিত্বে ও মেডিকেল অফিসার (সমন্বয়) ডা. উর্মি ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর (এমএনসি এন্ড এএইচ) ডা. মোঃ শামসুল হক।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এনএনএইচপি এন্ড আইএমসিআই) ডা.মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিউনেটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ ও চমেক হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. জাফর উল্লাহ। নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কীয় জেলা ভিত্তিক সূচকগুলো তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিপিএম (এনএনএইচপি এন্ড আইএমসিআই) ডা. সাবিনা আশ্রাফি ও ডিপিএম (এনএনএইচপি এন্ড আইএমসিআই) ডা. হুসাম মোঃ শাহ আলম।

কর্মশালায় অংশ নেন নবজাতক স্বাস্থ্য সেলের ম্যানেজার ডা. এহতেশাম কবির, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি (চট্টগ্রাম), মীর মোবারক হোসেন (কুমিল্লা), অংশু প্রু মারমা (বান্দরবান), নুপুর কান্তি দাশ (খাগড়াছড়ি), সাখাওয়াত উল্লাহ (চাঁদপুর), মাসুম ইফতেখার (নোয়াখালী), বিপাস খীসা (রাঙ্গামাটি), একরাম উল্লাহ (ব্রাহ্মণবাড়য়িা), চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুল করিম, কক্সবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিক উস সালেহীন প্রমূখ। কর্মশালায় বিভিন্ন হাসপাতালের নবজাতক ও শিশুরোগ বিভাগের মেডিকেল অফিসারবৃন্দ।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে নবজাতকের মৃত্যুর হার বেশি। প্রতিবছর জন্মের পর এ দেশে মারা যায় প্রায় ৬২ হাজার শিশু। এসব শিশুর মৃত্যু হয় জীবনের প্রথম মাসে ও অর্ধেকই মারা যায় পৃথিবীতে আসার দিনই। অপরিণত অবস্থায় জন্ম, সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্টের মতো ডেলিভারী কেন্দ্রিক জঠিলতা থেকে সৃষ্ট পরিস্থিতিই বাংলাদেশে মৃত্যুর প্রধান কারণ। এখানে মৃতসন্তান প্রসবের হারও উদ্বেগজনক। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে বর্তমান সরকার ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছে।

জনবল কম থাকা সত্বেও দেশের সরকারী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে নবজাতকের মৃত্যুরোধ ও শিশু স্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার-নার্সরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যেসব সন্তান জন্মের পর কাঁদেনা, ওজন কম, ঠিকমতো শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেনা, ঠিকমতো খেতে পারেনা ও জঠিল অবস্থা সরকার তাদের চিকিৎসায় দেশের ৪৭টি হাসপাতালে স্ক্যানো সেবা চালু করেছে। পরবর্তীতে ৬৪ জেলায় এ সেবা চালু হবে।

বক্তারা আরো বলেন, গর্ভাবস্থায় মা ও সন্তানের ঝুঁকি রোধে বাসা-বাড়িতে ডেলিভারী না করে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। ডেলিভারীর সময়ে মা-সন্তান দু’জনেই যাতে নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত থাকে সে বিষয়ে প্রাধান্য দিতে হবে। নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদেরকে স্ক্রিনিং সেবার আওতায় আনাতে হবে।

বাংলাদেশে প্রতিবছর পাঁচ হাজারের অধিক নারীর মৃত্যু হয় গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও সন্তান জন্মেও পর সৃষ্ঠ জঠিলতায়। অধিকাংশ মায়েরই মৃত্যু ঘটে কোন চিকিৎসক বা ধাত্রী ছাড়া বাড়িতে সন্তান প্রসবের সময়। গর্ভধারণকালে নির্ধারিত সময়সূচী অনুযায়ী হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে মাতৃত্বকালীন সেবা না নেয়ার কারণেও অনেক মায়ের মৃত্যু হয়। এসব বিষয়ে সবাইকে সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে।

সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.