আহমদ শফী’র মৃত্যুঃ বাবুনগরী, মামুনুলদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পিবিআই

0

সিটি নিউজঃ হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হত্যা করা হয়েছে বলে পিবিআই প্রতিবেদন দিয়েছেন। আর তাতে বর্তমান আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুলসহ সংগঠনটির ৪৩ নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১২ এপ্রির ) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রথম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ কায়সারের আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হাসান ‘আমরা আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত করে যা পেয়েছি তা-ই আদালতকে জানিয়েছি। এর বাইরে আর কিছু বলতে পারব না।’

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর আহমদ শফীর শ্যালক মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন বাদী হয়ে চট্টগ্রামের তৃতীয় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, আহমদ শফীকে মানসিক নির্যাতন এবং তার অক্সিজেন মাস্ক খুলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির, মাওলা মামুনুল হক, মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ (৫৫), আহসান উল্লাহ (৪৫), আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জাকারিয়া নোমান ফয়েজী (৪২), নুরুজ্জামান নোমানী, আব্দুল মতিন (২৫), মো. শহীদুল্লাহ্, মো. রিজুয়ান আরমান, মো. নজরুল ইসলাম (৩৫), হাসানুজ্জামান (২১), মো. এনামুল হাসান ফারুকী (২২), মীর সাজেদ (২০), মাওলানা জাফার আহমেদ, মীর জিয়াউদ্দিন (১৮), চহমদ (১৯), মাহমুদ (২০), আসাদুল্লাহ (৩০), জুবাইর মাহমুদ (২৪), এইচ এম জুনায়েদ, আনোয়ার শাহা (৩৭), মো. আহমদ কামাল (২০), মো. নাছির উদ্দিন (১৯), কামরুল ইসলাম কাছেমী (৩২), মো. হাসান (১৮), ওবায়দুল্লাহ ওবাইদ (৩০), জুবাইর (১৯), মুহাম্মদ (৩৫), আমিনুল হক (৩৩), রফিক সোহেল (৪৩), মবিনুল হক (২১), নাঈম (২০), হাফেজ সায়েম উল্লাহ ও মাওলানা হাসান জামিল।

মামলার এজহারে বলা হয়, মৃত্যুর আগে অসুস্থ হয়ে পড়লে আল্লামা আহমদ শফীর অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় কিন্তু তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়নি। তখন আসামিরা বলেছিল; ‘আগে বুড়াকে পদত্যাগ করতে বল, পরে বিদ্যুৎ দিব, অক্সিজেন দেব’। পরে হাসপাতালে নেয়ার সময় আল্লামা শফিকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে দেয়া হয়। এক ঘণ্টা পর ১ নম্বর ও ১৪ নম্বরসহ অপরাপর আসামিরা এ্যাম্বুলেন্সটি ছেড়ে দেন। ইতোমধ্যে কুমায় চলে গিয়েছিল আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

বাদী এজহারে উল্লেখ করেন, আল্লামা আহমদ শফীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনেক দেরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। যার কারণে তিনি কুমায় চলে যান। এ কারণে ‘রোগীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এখন আর সম্ভব নয়’ বলে ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ডাক্তারদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য শাহ আল্লামা আহমদ শফীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আল্লামা আহমদ শফীকে মৃত ঘোষণা করেন।

এজহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনার শুরু হয় গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে। তখন থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ষড়যন্ত্রমূলক ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যা করা হয়।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।

পরে গত ১২ জানুয়ারি পিবিআই টিম হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে বাবুনগরীসহ অভিযুক্তদের সাথে কথা বলে। এর তিন মাস পর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
সিটি নিউজ/ডিটি

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.