সাংবাদিক নির্যাতন ও দুর্নীতিবাজদের নগ্নচিত্র

0

জুবায়ের সিদ্দিকী / ছাদেক সবুজ: সচিবালয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকিয়ে রেখে তার উপর চালানো নিপিড়ন, পরে মামলা দিয়ে থানায় পাঠানো ও আটকের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দেশবাসী। দেশে সাংবাদিকতা ক্রমেই যেন বিপদসংকুল হয়ে উঠছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকরাই প্রায় প্রশাসন, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আক্রমনের শিকার হচ্ছেন। রোজিনা ইসলাম এর সর্বশেষ উদাহরণ।

তাঁর বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিসিয়াল সিক্রেস আইন ৩ ও ৫ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অথচ ১৯২৩ সালের এই আইন তামাদি, অপ্রাসং্গিক ও তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘষিক বলে সমাজে জোরালো মত রয়েছে। যে আইন বাতিল করা সরকারের দায়িত্ব, সে আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার ঘটনা হতবাক হয়েছে দেশবাসী। এই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকরা তথ্য পাওয়ার জন্য নানা পদ্ধতি ও কৌশল বেচে নিয়ে থাকেন।

বিভিন্ন র্সোসের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেন। এ পদ্ধতি সারাবিশে^ই বহুলভাবে স্বীকৃত। তথা সঠিক ভাবে যাচাই-বাচাই করে সংশ্লিষ্ঠদের মন্তব্য সহকারে প্রকাশ করা সাংবাদিকের কাজ। সরকারী প্রতিষ্ঠান ও কমকর্তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জন্য এসব পদ্ধতি ও কৌশলের কোন বিকল্প নেই। অথচ পেশাগত কাজ করতে গিয়ে রোজিনাকে নির্যাতন ও মামলার শিকার হতে হলো।

যেভাবে তাকে আটকে রাখা হয়েছে তা সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা হিসেবেই বিবেচিত হবে। স্বাধীন সংবাদচর্চা ও মত প্রকাশের জন্য এ ধরণের ঘটনা নেতিবাচক ফল বয়ে আনবে। অথচ হতাশাব্যঞ্জক ভাবে দেশে একের পর এক সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানীর শিকার হচ্ছে। সম্পাদক, প্রকাশক ও সাংবাদিকরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে একজন নারী সাংবাদিকের উপর যে নির্যাতন হয়েছে তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও সাংবাদিকতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ । রোজিনার এই মামলা গণমাধ্যমকে বেকায়দায় ফেলতে একটি চক্রান্ত।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এই ঘটনায় দেশের সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্থ করবে। দেশের দুর্নীতিবাজ আমলারা লুণ্ঠণ করছে দেশের টাকা । এরা অবৈধ অর্থের প্রভাবে সাংবাদিকদের উপর চড়াও হচ্ছে। রোজিনাকে হেনস্থা করা দুর্নীতিবাজদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন সময়ের দাবী, এদের অবৈধ সম্পদের হিসাব জনগণকে অবহিত করা এখন সাংবাদিকদের কর্তব্য। মন্ত্রণালয়ের এসব দুর্নীতিবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দে কারা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।

স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয়ের দেওয়া এই মামলা সাংবাদিকদের স্বাধীনতার উপর হস্থক্ষেপ। অবৈধ অর্থের প্রভাবে এরা মানষকে মানুষ বলে গণ্য করছে না। রোজিনাকে সচিবালয়ের মত একটি জায়গায় একটি কক্ষে নির্যাতন মধ্যযুগীয় বর্বরতাকে হার মানায়। এর অবসান প্রয়োজন । এভাবে দুর্নীতিবাজ আমলারা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হবে- এটা মেনে নেওয়া যায় না।

সিটি নিউজ/জস/এসআরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.