মিথ্যা ঘোষণায় সরিষার আড়ালে পপি বীজ আমদানি: চট্টগ্রাম বন্দরে আটক

0

সিটি নিউজ : সরিষা বীজের আড়ালে দেশে আনা হয়েছে টনকে টন পপি বীজ। আফিম তৈরির উপকরণ এই পপি বীজ আটক করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
নিষিদ্ধ মাদক আফিমের কাঁচামাল ৪২ মেট্রিকটন ‘পপি বীজ’ অবৈধভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা হয়েছে।  তবে কাস্টমসের তৎপরতায় যেগুলো আটক করা সম্ভব হয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে সরিষার দানা ঘোষণা দিয়ে কনটেইনারে করে পপি বীজের এই চালান আনা হয়। এর আগে নিষিদ্ধ তরল কোকেনের একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে আটক হয়েছিল, যা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

প্রায় দেড়মাস আগে ‘সন্দেহজনক’ পপি বীজের চালানটি আটক করে এর খালাস স্থগিত করে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।  মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক ল্যাবে পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়ার পর সোমবার (৩১ মে) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পায় কাস্টমস।  এরপর সেটি প্রকাশ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিচার্স (এআইআর) শাখার সহকারি কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, ‘পপি বীজ দিয়ে নিষিদ্ধ মাদক আফিম তৈরি হয়।  পপি বীজ আমদানি আমাদের দেশে পুরোপুরি নিষিদ্ধ।  মাদকের কাঁচামালের চালান দেশে আনার সঙ্গে সংঘবদ্ধ কোনো চক্র জড়িত বলে আমাদের ধারণা। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজমিন ট্রেড সেন্টার নামে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠান সরিষা বীজের ঘোষণায় মালয়েশিয়া থেকে দুই কনটেইনার পণ্য আমদানি করে। তাদের সিএন্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনাল পণ্য চালানটি খালাসের গত ১৮ এপ্রিল বিল অব এন্ট্রি কাস্টমসে দাখিল করে। সরিষা বীজের শুল্ক বাবদ ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৭ টাকা টাকা পরিশোধ করে।

কিন্তু সন্দেহজনক উপস্থিতির তথ্য পেয়ে কাস্টমস সেটির খালাস স্থগিতের নির্দেশ দেয়। ২২ এপ্রিল কায়িক পরীক্ষা হয়।

কাস্টমস কর্মকর্তা রেজাউল বলেন, ‘কায়িক পরীক্ষায় আমরা পপি বীজের উপস্থিতি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়। নমুনা পাঠাই বন্দরের কোয়ারেনটাইন অফিসে।  তারাও একই মত দেয়, কিন্তু বিষয়টি তাদের এখতিয়ারভুক্ত না হওয়ায় লিখিত কোনো মত দেয়নি।  এরপর আমরা ঢাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক ল্যাবে নমুনা পাঠাই।  সেখান থেকে গতকাল (সোমবার) চূড়ান্ত প্রতিবেদন এসেছে যে, সেগুলো পপি বীজ।’

কায়িক পরীক্ষায় দেখা গেছে, আমদানিকারকের ঘোষিত ৫৪ টন সরিষা বীজের স্থলে পণ্যটি এসেছে মাত্র ১২ টন।  বাকি ৪২ টন আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ।  একই রকমের বস্তায় ওপরে সরিষার বীজ রেখে ভেতরে নেওয়া হয় পপি বীজ।

কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, মালয়েশিয়ায় পাচার করা অর্থ দিয়ে একটি চক্র পপি বীজ কিনে বাংলাদেশে পাঠানোর এই কার্যক্রম শুরু করেছে। কারণ, আন্তর্জাতিক বাজারদর অনুযায়ী ৪২ টন পপি বীজের বিক্রয়মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা।  অথচ সরিষা বীজের দাম বাবদ এলসির মাধ্যমে ২২ লাখ টাকা পরিশোধ করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।

পণ্যের বাকি দাম অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে পরিশোধ করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।  মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।

সিটি নিউজ/এসআরএস

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.