প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান আটকে পড়া ইপিএস কর্মীরা

0

অসীম বিকাশ বড়ুয়া,কোরিয়া : দক্ষিণ কোরিয়ায় ফিরে যেতে পারছে না মাত্র ৯০ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটিতে এসে দেশে আটকে পড়া প্রবাসী ইপিএস কর্মীরা। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দেশে এসে আটকা পড়েছেন তারা। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার দাবি তুললেও তারা যেতে না পারায় এখন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ইপিএস কর্মীদের একটি প্রতিনিধি দল।
সোমবার (২৩ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আটকে পড়া প্রবাসীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এস এম আলী। তিনি বলেন, আমরা দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী কমিটেড-রিএন্ট্রি কর্মীরা ৯০ দিনের আবশ্যিক ছুটিতে দেশে এসে করোনা মহামারীর কারণে প্রায় দুই বছর ধরে আটকে আছি। এখন আমাদের দুর্দশা চরম আকার ধারণ করেছে। এ সময় দেশে আটকে পড়া ইপিএস কর্মী এস এম আলী,মৃদুল সোম,মঞ্জুরুল ইসলাম,মোহাম্মদ আওলাদ,রতন দে, জাহিদ খান ও সাইফুল ইসলাম খানসহ মোট ৩৫ জন ইপিএস কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীরা অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করে আসছেন। সে দেশের আইন অনুযায়ী কোরিয়াতে প্রবেশ করে একই কোম্পানিতে চার বছর ১০ মাস কাজ করার পর কমিটেড কর্মী হিসেবে আগের কোম্পানিতে পুনরায় প্রবেশ করা যায়। এজন্য ৯০ দিনের বাধ্যতামূলক ছুটিতে রিএন্ট্রি-কমিটেড হিসেবে ইপিএস কর্মীরা ভিসা প্রাপ্ত হলেও কোরিয়া পুনরায় যেতে পারছেন না।
তারা তাদের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে জানান, দক্ষিণ কোরিয়া ২০০৮ সাল থেকে ‘এম্প্লয়মেন্ট পার্মিট সিস্টেম’ ইপিএস এর মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে কর্মী সংগ্রহ করে আসছে। বাংলাদেশি কর্মীরা ‘বাংলাদেশ ওভারসীজ এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড’বোয়েসেলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবেশ করে থাকেন।২০০৮ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রায় ২১ হাজার ৯৩৩ জন বাংলাদেশি কর্মী ইপিএস এর মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া প্রবেশ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, প্রায় দুই বছর যাবত করোনা মহামারীর ফলে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশ ভিসা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে। আমাদের দেশের করোনার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের ভিসা নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দেয় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ার পরেও কমিটেড কর্মীরা দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করতে পারেনি। নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দেয়ার পরে ছুটিতে আসা ইপিএস সহ অন্যান্য ভিসাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি ব্যক্তিরা দক্ষিণ কোরিয়া গিয়ে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। যার ফলে পুনরায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে বাংলাদেশ। এর ফলে আটকে থাকা দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী ইপিএস কর্মীদের আশার আলো নিভতে শুরু করে। এখন দ্রুত দেশটিতে ফিরতে না পারলে নিয়োগকারী কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। এর ফলে প্রবাসী ইপিএস কর্মীদের চাকরি হারানোর ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। অথচ এসব কর্মীরাই বিদেশে কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য নিয়ে এই প্রতিবেদককে ইপিএস কর্মী সাইফুল ইসলাম খান জানান, আমরা বিশ্বাস করি এই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে এবং তাঁরা অনতিবিলম্বে সকল মাধ্যমে যোগাযোগ ত্বরান্বিত করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ আটকে পড়া কোরিয়াগামী কর্মীদের দ্রুত কর্মস্থলে ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.