রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই তবে মানুষের জন্য কাজ করতে চান হাবিবুর রহমান টুটুল

বিত্ত বৈভবের মালিকদের কাছে রাজনীতিতে অসহায়

0

সতীর্থ ধ্রুব : হাবিবুর রহমান টুটুল। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য। বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকে উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন৷ পাশাপাশি নিয়োজিত রেখেছেন নানা ধরনের সামাজিক কর্মকান্ডে। পেশাগত জীবনে ব্যস্ত থাকলেও আদর্শগত কারণেই রাজনীতি ও সমাজ ভাবনা আছে তার মধ্যে। সেজন্য সুযোগ পেলেই এখনো রাজনৈতিক সতীর্থদের সময় দেন। সাবেক এই ছাত্রনেতা বিশ্বাস করেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করা গেলে রাজনীতির গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি তিনি এটাও স্বীকার করেন কোন ব্যবসায়ী বা অবসরপ্রাপ্ত আমলা যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে রাজনীতি করতে চায় তাহলে তাকে সুযোগ দেওয়া উচিত।
হাবিবুর রহমান টুটুলের জন্ম চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। ক্যামিকেল কমপ্লেক্স উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তার হাতেখড়ি হয়। সে প্রসঙ্গে দৈনিক সংবাদ সারাবেলা’র সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, ১৯৯২ সালে ক্লাস নাইনে পড়ার সময় ছাত্ররাজনীতিতে আমার হাতেখড়ি হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী জমিরউদ্দীন সরকারের একটা বৈষম্যমূলক গণবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করি। ঐ আন্দোলনের ভেতর দিয়ে আমার নেতৃত্ব প্রকাশ পায় এবং তখনকার ডাকসাইটে ছাত্রনেতারা আমাকে ছাত্ররাজনীতিতে উৎসাহিত করে।
সে সময় যারা ছাত্রলীগ করতো তারা সবাই দেশপ্রেমের তাগিদেই ছাত্রলীগ করতো, এমনটি দাবি করে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে যখন আমরা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে যাই তখনকার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন রকমের। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়েই আমাদের রাজনীতিতে হাতে খড়ি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল। তাঁর অবর্তমানে বাংলাদেশকে কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঁকড়ে ধরে বিনির্মাণ করব, সেটাই ছিল আমাদের ছাত্র রাজনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য। তখন ছাত্ররাজনীতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল ছাত্রদের সমস্যা নিয়েই ছাত্রনেতারা কাজ করতেন৷ আমরা একদিকে যেমন ছাত্রদের কল্যানের কথা ভাবতাম তেমনি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের যারা খুন করেছিল তাদের বিচারের দাবিতেও সোচ্চার ছিলাম।
একেবারে তৃণমূল থেকে রাজনীতি করতে করতে কেন্দ্রীয় নেতা হওয়া হাবিবুর রহমান টুটুলের উথান মোটেই সহজ ছিল না। বিরোধী দলের রাজনীতিতে ছাত্রলীগ যেমন দুর্বার ছিল তেমনি তাদের চলার পথ ছিল কণ্টকাকীর্ণ। তিনি বলেন, ১৯৯২ সালে আমি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সিসিসি উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস নাইনে পড়তাম। তখন ফরম পূরণ করে স্কুল  ছাত্রলীগের সদস্য হয়েছিলাম। পরে সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুন্ড ইউনিয়ন ছাত্রলীগে আমি দফতর সম্পাদক, সীতাকুণ্ড উপজেলা ছাত্রলীগে সদস্য, একই সময়ে নিজামপুর কলেজ ছাত্রলীগে সদস্য, সরকারী কমার্স কলেজ ছাত্রলীগ- এ সাংগঠনিক সম্পাদক, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহ শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করি। পরবর্তীতে আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী ফোরাম কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ( লিয়াকত শিকদার- নজরুল ইসলাম বাবু) এর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। আমি একেবারেই তৃণমূল থেকে উঠে আসা মানুষ।

অনেক ছাত্রসংগঠন থাকতেও রাজনীতি করার জন্য কেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে বেছে নিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো, আমরা যখন বাংলাদেশের ইতিহাস পড়ি তখন বুঝি বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু এক স্বত্ত্বা। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। একটিকে বাদ দিয়ে কোনভাবেই অন্যটির ইতিহাস রচনা করা সম্ভব নয়। আমি উপলব্ধি করেছিলাম, যে কোন দেশপ্রেমিক নাগরিক অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে যারা উদ্বুদ্ধ হয় তাদের ঠিকানা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সেজন্যই আমি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আকৃষ্ট হয়েছিলাম।

দৈনিক সংবাদ সারাবেলা’র সাথে আলাপকালে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, নব্বই দশকে যারা ছাত্রলীগ করেছিল তাদেরকে অনেকগুলো অপশক্তির বিরুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই করতে হয়েছে। তখন খালেদা জিয়ার সরকার ক্ষমতায়। মাঠে ছাত্রদল ছিল, শিবির ছিল। খালেদা সরকারের অনুগত পুলিশ ছিল। জামাত শিবির তখন একটা প্রপাগান্ডা চালাতো৷ তা হলো, “নৌকায় ভোট দিলে বিবি তালাক হয়ে যাবে” বা “বেহেশতে যেতে হলে নৌকায় ভোট দেওয়া যাবে না”। এমন মিথ্যা ও জঘন্য বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করাই ছিল আমাদের সময়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অন্যতম এজেন্ডা।

৭৫ পরবর্তী সময়ে দীর্ঘদিন বিরতি দিয়ে ১৯৭৫ সালে ক্ষমতায় এসেছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। স্মৃতিচারণ করে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ একুশ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল। দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে ছাত্রলীগের যেসকল নেতাকর্মীরা লড়াই সংগ্রাম করছিল তাদের জন্য সেটা ছিল পরম আনন্দের ও বিজয়ের। মানুষের প্রত্যাশা ছিল অনেক। কিন্তু তার আগে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিল। তাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই ঘাটতি পূরণ করতে গিয়ে বেশ হিমশিম খেতে হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ও চাহিদা পূরণে নানা ধরনের পদক্ষেপে হাত দিয়েছিলেন৷ দীর্ঘদিনের অশান্ত পার্বত্য জনপদে তিনি পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও ত্রিশ বছর মেয়াদী গঙ্গা পানি চুক্তি ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে এক ঐতিহাসিক বিজয়।

সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতে গিয়ে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সরকার গঠন বাংলাদেশের ভাগ্য পরিবর্তনের দ্বার উন্মুক্ত করে দেয়। অর্থনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আজ বিশ্বের কাছে একটি বিস্ময়। অর্থনীতির মাপকাঠিতে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর স্বল্পোন্নত দেশগুলোর তালিকায় আছে। অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাজেটের আকার বেড়েছে। মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। “বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি” এমন অপবাদ থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে এসেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই এতোকিছু সম্ভব হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য আগামীতেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার বিকল্প নেই৷

আলাপচারিতার একপর্যায়ে দৈনিক সংবাদ সারাবেলাকে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, একজন সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে আমার উপলব্ধি হলো জননেত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই ত্যাগীদের মূল্যায়নের পক্ষে। যারা দুঃসময়ে রাজপথে ছিলেন তাদের প্রত্যেককেই নেত্রী কোন না কোনভাবে মূল্যায়ন করছেন। এতো বড় দলে কিছু বিক্ষিপ্ত উদাহরণ হয়তো থাকতে পারে। তবে নেত্রীর সদিচ্ছা আছে, এটা নিয়ে দ্বিমত করার কোন সুযোগ নেই। তৃণমূল থেকে যারা উঠে এসেছে তাদেরকেই তিনি রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন বরাবরই। গত কয়েকটি সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, জেলা কমিটিতে এমন দৃষ্টান্ত অসংখ্য দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রেও ত্যাগীরাই মূল্যায়িত হচ্ছে।

রাজনীতিতে আমলা ও শিল্পপতিদের প্রভাব বাড়ছে এমন প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান টুটুল বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ পরিসরের গণসংগঠন। নির্দিষ্ট আদর্শ ও উদ্দেশ্য মেনে এখানে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। যারা এখানে রাজনীতি করতে আগ্রহ দেখায় তাদের সবার মনোভাব অনেক সময় বুঝে উঠা মুশকিল। তবে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে যারা আওয়ামী লীগ করছেন তাদেরকে স্থান, কাল, পাত্র ভেদে অনেকে হয়তো মেনে নিচ্ছে।  আবার অনেকে মেনে নিচ্ছে না। যারা মেনে নিতে পারছে না তাদের ক্ষেত্রে অনেক সময় স্থানীয় প্রভাব, অসুস্থ প্রতিযোগিতা, হিংসা বিদ্বেষ সহ নানান বিষয়ও কাজ করে। তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী বা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আছে এমনটি ছাড়া আর সবার জন্যই তো দলে রাজনীতি করার সুযোগ আছে। কেউ যদি দলের আদর্শ, শৃংখলা মেনে রাজনীতি করে তাহলে তিনি রাজনীতিতে নতুন হলেও অন্যরা তাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করা উচিত বলে মনে করেন হাবিবুর রহমান টুটুল। তবে দলের আদর্শ বিরোধী কাজ করলে তখন দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেই দাবি করেন তিনি।

দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় কোন্দল দলে প্রভাব ফেলে কিনা এমন প্রসঙ্গে টুটুল বলেন, আওয়ামী লীগ একটা বড় দল। কেন্দ্র থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত এখানে অনেক বিশাল ব্যাপ্তি। জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দলের প্রাণ। তিনি একা অনেক কিছু দেখা অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠে না। তবে আমি মনে করি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত যদি নবীন ও প্রবীণের সমন্বয় ঘটানো যায় এবং সাবেক ছাত্রনেতাদের অংশগ্রহণ বাড়ানো বা তাদের যদি যথাযথা ভাবে মূল্যায়ন করা যায় তাহলে দল আরো অধিক শক্তিশালী হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, যারা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বিসর্জন দিয়ে রাজনীতি করেছে তাদের অনেকে টাকা পয়সার মালিক হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে তারা প্রভাবশালী বিত্ত বৈভবের মালিকদের কাছে রাজনীতিতে অসহায় হয়ে পড়ে। এছাড়া মান অভিমানতো আছেই। তবে আমি মনে করি, তাদেরকে যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করানো সম্ভব।
এখনকার ছাত্ররাজনীতি নিয়ে আশাবাদী হাবিবুর রহমান টুটুল৷ তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি এখন যারা ছাত্রলীগ করছে তারা প্রযুক্তিতে অনেক স্মার্ট। বিশ্ব তাদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু কিছু কুচক্রিমহল ছাত্রলীগকে কলংকিত করার জন্য তাদের এজেন্ট এখানে ঢুকিয়ে দেয়। এসব এজেন্টদের অপকর্মের দায়ভার ছাত্রলীগের কাঁধে এসে পড়ে। এদের সম্পর্কে ছাত্রলীগকে সচেতন থাকা উচিত।

সারা জীবন রাজনীতির সাথে থাকা হাবিবুর রহমান টুটুল প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে কী ভাবেন এমন প্রশ্ন করতেই বললেন, ছাত্রলীগ করে আমি কী পেলাম সেটা বড় কথা নয়, সমাজ ও দেশকে কী দিতে পারলাম সেটাই বড় কথা। শেখ হাসিনার সরকার যখন ক্ষমতায় থাকে তখন এদেশের মানুষ কিছু পায়। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারন করি তারা কী পেলাম বা কী পেলাম না সেই চিন্তা আমরা করি না। মানুষ ভালো থাকলে, জননেত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের মানুষ কিছু যাতে কিছু পায় আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করি।

জনপ্রতিনিধি হওয়ার কোন স্বপ্ন আপাতত দেখছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হওয়া আল্লাহ প্রদত্ত উপহার। আমি যদি মানুষকে সময় দিই, মানুষকে ভালোবাসি, মানুষের সাথে থাকি- তাহলে দল একদিন না একদিন আমাকে মূল্যায়ন করবে। আমি যখনই সুযোগ পাই, বা এলাকার কোন কিছুতে যদি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের সুযোগ হয়- আমি সেটা করার চেষ্টা করি। মানুষের জন্য আমার একটা কমিটমেন্ট আছে। কী পেলাম কী পেলাম না সেটা কখনো ভাবি না। আমি বিশ্বাস করি, মানুষের জন্য কাজ করলে মানুষ অবশ্যই তার প্রতিদান দিবেই।

হাবিবুর রহমানের জন্ম ও বেড়ে উঠা সীতাকুণ্ডে। পড়াশোনা ও ছাত্ররাজনীতি করতে গিয়ে এ জনপদে যথেষ্ঠ সময় দিয়েছেন তিনি। পিতা আব্দুল ছাত্তার ও মা মমতাজ বেগমের সন্তান হাবিবুর রহমান টুটুল এ সীতাকুণ্ড মিরসরাইতে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে গিয়ে বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৯৯৩ সালে ছাত্রলীগের সূতিকাগার খ্যাত নিজামপুর কলেজে শিবিরের আক্রমণে তার হাত কেটে গিয়েছিল। সেই ক্ষতচিহ্ন এখনো বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। সেই সীতাকুণ্ড নিয়ে আবেগ প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, সীতাকুণ্ড খুব সম্ভাবনাময়ী এলাকা। আমাদের একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে সমুদ্র। শিল্পাঞ্চল হিসেবে এখানে কাজের পরিবেশ আছে। চট্টগ্রাম বন্দরের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ার শিল্পাঞ্চল হিসেবে ইতোমধ্যে নিজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়েছে সীতাকুণ্ড।

তিনি মনে করেন, রাজনৈতিক ভাবে যেমন সীতাকুণ্ডের ঐতিহ্য আছে তেমনি অর্থনৈতিক ভাবে আছে এর অপার সম্ভাবনা। তার ভাষায়, সীতাকুণ্ড খুব গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভৌগোলিক কারণে সীতাকুণ্ড গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছিল। পরবর্তীতে রাজনৈতিক ভাবেও সীতাকুণ্ড প্রত্যেক দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে প্রত্যেকবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে দলের প্রার্থী বিজয় লাভ করে সে দলই রাষ্ট্রীয় ভাবে সরকার গঠন করে। অর্থাৎ সীতাকুণ্ডের অধিকাংশ মানুষের পছন্দ অপছন্দ পুরো দেশের জনগণের মনোভাব হিসেবে প্রতিফলিত হতে দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই সীতাকুণ্ডে উন্নয়ন হয়। ১৯৯৬ সালেও জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর প্রচুর উন্নয়ন হয়েছিল। ২০০৯ সালেও আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর থেকে সীতাকুণ্ডে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। তবে আমাদের এখানে নীতিমালার অভাব রয়েছে। এখানে অনেক বন্ধ মিল কারখানা রয়েছে। আমাদের স্থানীয় সাংসদ এসব মিল কারখানা চালু করার জন্য বেশ চেষ্টা করছেন৷ এসব মিল কারখানা চালু হলে এখানে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে৷ আশার দিক হলো সীতাকুণ্ডে প্রচুর শিল্প কারখানা স্থাপন হচ্ছে। ফলে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সীতাকুণ্ডের পাশে মিরসরাইতে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কাজ শেষ হলে কয়েক লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং কর্ণফুলী টানেল উদ্বোধন হওয়ার পর পুরো চট্টগ্রাম অন্যরকম এক চেহারা পাবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.