চট্রগ্রাম অফিস: নগরীর মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত উড়াল সেতু নির্মাণ ও পরবর্তীতে তা বিমান বন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করার যে চিন্তা ভাবনা চলছে তা ভবিষ্যতের জন্য মোটেও ভাল হবে না উল্লেখ করে উড়াল সেতুর পরিবর্তে নগরীতে টেকসই পরিবহন ব্যবস্থাপনার পারমর্শ দিয়েছে ‘পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম’।
বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ পারমর্শ দেয়া হয়।
ফিজিবিলিটি স্টাডি না করে নির্মিত বহদ্দারহাট উড়াল সেতু যানজট নিরসনে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না এমন মতামত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন রাখা হয় যানজট নিরসন নাকি শুধুমাত্র উন্নয়নের মহোৎসব সাধারন্যে দৃশ্যমানের জন্য একের পর এক উড়াল সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে?
সংবাদ সম্মেলনে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর সিকান্দার খান বলেন,চট্টগ্রাম নগরে আদৌ উড়াল সেতু নির্মাণের প্রয়োজন আছে কি না , সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটা গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করা হোক । বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে । তা না হলে হাজার কোটি টাকার উড়াল সেতু একসময় নগরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে দেখা দিতে পারে।
তিনি আরো বলেন,অপরিকল্পিত ও অপ্রয়োজনীয় বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার যানজট নিরসনে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না ।
বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের অকার্যকারিতার কারিগরি দিকগুলো বিশ্লেষন না কওে এবং সঠিকভাবে ফিজিবিলিটি স্টাডি না করে মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ শুরু হয়েছে। শুনা যাচ্ছে এটা নাকি বিমান বন্দর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হবে। এই উড়াল সেতু নগরীর জন্য সুফল বয়ে আনবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, বহদ্দারহাট উড়াল সেতু উদ্বোধন হওয়ার পর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী সরেজমিনে পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যে এ উড়াল সেতু কার্যকর নয় ।এরপর মন্ত্রীর নির্দেশে চট্টগ্রাম আইইবি সেমিনার কক্ষে তার উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম নগরের স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্লানিং এর কারিগরি ,যানবাহন জরিপের তথ্য-উপাত্ত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়। যে পরিমান যানবাহন চট্টগ্রাম নগরীতে দৈনিক চলাচল করে তা বিশ্লেষনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরে এই উড়াল সেতুর প্রয়োজন নাই ।
আর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এই উড়াল সেতুর (মুরাদপর-লালখার বাজার) যে ফিজিবিলিটি রির্পোট দিয়েছে তাও বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এই উড়াল সেতুর প্রয়োজন নেই । আমাদের দুর্ভাগ্য, এতগুলো কারিগরি তথ্য-উপাত্ত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করার পরও এই উড়াল সেতুগুলোর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি , বলেন এই প্রকৌশলী।
তিনি আরো বলেন, ফ্লাইওভার না করে চট্টগ্রাম নগরে টেকসই পরিবহন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যানজট নিরসন করা যায়।
প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, গ্রাউন্ডে দুটি লেইন নষ্ট করে উড়াল সেতু করার কোন যুক্তি নেই। এছাড়া উড়াল সেতু থেকে যানবাহন কীভাবে বিভিন্ন জংসন দিয়ে টার্ন করবে তা কারো বোধগম্য নয়।