সিআরবিতে খুনের প্রধান আসামি লিমনসহ তিন জন গ্রেপ্তার – র‌্যাব ৭ সংবাদ সম্মেলন

0

চট্টগ্রাম অফিস, সিটিনিউজবিডিঃ ২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবিতে কোটি টাকার রেলের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে শিশুসহ জোড়া খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত প্রধান আসামি লিমন। লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘লিমনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, নগরীর হাইলেভেল রোডের ওমর ফারুক টাওয়ার থেকে লিমনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। ওই টাওয়ারের আলাদা দুটি ফ্ল্যাটে থাকতো লিমন ও তার বাহিনীর সাঙ্গপাঙ্গরা। আলাদা দুটি ফ্ল্যাটের একটিতে থাকতো লিমন নিজে এবং অপরটিতে তার বাহিনীর সাঙ্গপাঙ্গ ও সহযোগীরা থাকতো। দুটি ফ্ল্যাটেই গড়ে তোলা হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের মজুদ।’

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় র‌্যাবের পতেঙ্গা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৭ এর পরিচালক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমনের সন্ত্রাসী জগতের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে এসব জানান।

এসময় তিনি দাবি করেন গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে বেশ কয়েকটি অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ম্যাগাজিনসহ হাইলেভেল রোডের ওই আস্তানা থেকে লিমনসহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।  প্রথমে লিমনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বীকার করলেও এএসপি সাহেদা পরে ফোন করে গ্রেপ্তারের বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন।তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসী রিমনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে ওই টাওয়ারের দুটো ফ্ল্যাটেই তার বিশাল অস্ত্র মজুদ ছিল। আমাদের অপারেশনের বিষয়টি টের পেয়ে তার সহযোগীরা অস্ত্র গোলাবারুদ নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এসব অস্ত্র এখন কার কার কাছে, কি পরিমানে আছে সব তথ্যই লিমন র‌্যাবকে দিয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার ও তার সহযোগীদের ধরতে র‌্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে।’

লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন বলেন, ‘২০১৩ সালের ২৪ জুন শিশুসহ জোড়া খুনের প্রধানতম আসামি সাইফুল আলম লিমনকে অস্ত্র-গুলি ও তিন সহযোগীসহ গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়। এই সন্ত্রাসী লিমনের বিরুদ্ধে জোড়া খুনের মামলা ছাড়া নগরীর বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, হত্যার হুমকি ও নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। র‌্যাব বরাবরই এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে। এই ধরনের অপরাধীদের দমনে র‌্যাব কাজ করে যাচ্ছে।’ এসময় লিমনকে গ্রেপ্তারে কোনো ধরনের চাপ ছিল কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জাবাবে লে. কর্নেল মিফতাহ বলেন, ‘কোনো চাপ ছিল না। র‌্যাব কখনো চাপের কাছে নতি শিকার করেনি, করবেও না। টেন্ডারবাজ ও সন্ত্রাসীদের কোনো ধরনের ছাড় দেয়া হবে না। সিআরবিতে টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। কারও রাজনৈতিক পরিচয় দেখে র‌্যাব অভিযান পরিচালনা করে না। র‌্যাবের কাছে কোনো অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় মুখ্য নয়।’ এসময় সিআরবি ছাড়াও রেলের বিভিন্ন দপ্তরে সন্ত্রাসীদের দৌরত্মের কথা জানিয়ে সেখানেও র‌্যাব ভূমিকা পালন করবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মিফতাহ উদ্দিন বলেন, ‘আপনাদের দেয়া তথ্য ও বিভিন্ন সময় প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে আমরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে থাকি।’

সংবাদ সম্মেলন লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ  বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিকরা) সবসময় এই শহরে কাজ করেন, আমরা আসি বাহির থেকে। আমাদের অনেকেই নতুন, আবার অনেককেই প্রায়াসই বদলি হয়ে যেতে হয়। তাই আপনাদের দেয়া তথ্য আমাদের বেশি কাজ দেবে। তবে যে কেউ অভিযোগ করলেই র‌্যাব দৌড় দিতে পারে না। কেননা অনেকে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য র‌্যাবকে ব্যাবহারের অপপ্রয়াস চালাতে পারে। তবে সাংবাদিকদের জন্য আমাদের দুয়ার সবসময় খোলা আছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবিতে এক কোটি ১০ লাখ টাকার টেন্ডার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে বাবর ও লিমনের অনুসারীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে যুবলীগের কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু আরমান (৮) নিহত হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.