রায় প্রত্যাখ্যান করলেন রাজীবের বাবা

0

সিটিনিউজবিডি :: গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ব্লগার রাজীব হায়দার শোভন হত্যা মামলার রায় ‘প্রহসন’ বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন বাবা ডা. নাজিমুদ্দীন। রাজীব হত্যা মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড, একজনকে যাবজ্জীবন এবং পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে রায় ঘোষণা করেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক সাঈদ আহমেদ।

রায় ঘোষণার পর ‘সঠিক বিচার পাননি’— এমন মন্তব্য করে মামলার বাদী নাজিমুদ্দীন বলেন, ‘আমরা সঠিক বিচার পাইনি। রাজীব হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী আমার হাত ধরে বলেছিলেন, রাজীব আপনার একার নয়, আমাদেরও সন্তান। তার সঠিক বিচার হবে। কিন্তু সঠিক বিচার পেলাম কই?’
রায়ে দুই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন— নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দিপু (২২) এবং পলাতক আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা (৩০)।

রাজীবকে হত্যার দায়ে ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০২ ধারা ও ৩৪ ধারায় দোষীসাব্যস্ত করে ১৮৯৮ সালের ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিকিউশন’র ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগের অনুমতি সাপেক্ষে আসামিদের মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিচারক। মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

অন্য আসামিদের মধ্যে মাকসুদুল হাসান অনিককে (২৬) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ১০ হজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এহসানুর রেজা রুম্মান (২৩), মো. নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ (১৯) ও নাফির ইমতিয়াজকে (২২) ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে (২০) তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
একই মামলায় অপর আসামি শাইখুল ইসলাম মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

রাজীব হত্যা মামলায় মোট ৫৫ সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জন সাক্ষ্য দেন। সোমবার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার তারিখ নির্ধারণ করেন বিচারক।

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরার পথে পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হন রাজিব। ওই ঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিমুদ্দীন পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে ৫৫ জনকে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী করা হয়।

মামলার আট আসামি হলেন— নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দিপু (২২), মাকসুদুল হাসান অনিক (২৬), এহসানুর রেজা রুম্মান (২৩), মো. নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ (১৯), নাফির ইমতিয়াজ (২২), সাদমান ইয়াছির মাহমুদ (২০), মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী ও রেদোয়ানুল আজাদ রানা (৩০)।
চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে রানা পলাতক রয়েছেন। অন্য আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৫ সালের ১৮ মার্চ ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.