সিটিনিউজবিডি :: কুড়িগ্রাম সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী হত্যার ৫ বছর আজ ৭ জানুয়ারি। কিন্তু এখনো ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার পায়নি তার পরিবার।
ভারতের কোচবিহারে বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে পরপর দু’বার ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম সাক্ষী দিয়ে এলেও অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় আদালত। পরে ন্যায় বিচারের আশায় ভারতের মানবাধিকার সংগঠন মাসুম এর (মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ) সহায়তায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট আবেদন দাখিল করে ফেলানীর বাবা।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারিত থাকলেও দিনের কার্যতালিকায় না থাকায় শুনানি হয়নি। ফলে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এখনো ঝুলে আছে ফেলানী হত্যার বিচার।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত হয় বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী। কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ ৪ ঘন্টা লাশ ঝুলে থাকার ছবি দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে প্রচার হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নড়ে-চড়ে বসে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
ফেলানী হত্যার আড়াই বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে বিশেষ আদালতে বিচার কাজ শুরু করে বিএসএফ। শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেয় বিএসএফ’র আদালাত। আবারো সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে একই আদালত। ২০১৪ সালের ২ জুলাই পুনরায় অমিয় ঘোষের বেকসুর খালাসের রায় বহাল রাখে আদালত।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম জানান, বিএসএফ’র বিশেষ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার না পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মাসুমের সহযোগীতায় রিট আবেদন করেছি। ভারতের সর্বোচ্চ এ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় আছি।
ফেলানীর মা জাহানারা বেগম জানান, আমার মেয়েকে কাঁটাতারের বেড়ায় নির্মমভাবে হত্যা করেছে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ। আমি ভারতের উচ্চ আদালতে তার ফাঁসি চাই।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামের আইন সহায়তাকারী ও কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন জানান, কাঁটাতারে ফেলানী হত্যার ৫ বছর হয়ে গেছে। ন্যায় বিচার না পেয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করেছে ফেলানীর বাবা। বিলম্ব হলেও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আলোচিত ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে বন্ধ হবে সীমান্ত হত্যা এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।