নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : পারিবারিক কলহের জের ধরে নারায়ণগঞ্জে পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যা করা হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন জেলা পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন। আর এ ঘটনায় প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটকও করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
শনিবার রাতে ওই ঘটনার পর সাংবাদিকদের দেয়া অনুষ্ঠানিক বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন জানান, ‘শনিবার বিকেলে যেকোনো সময় ওই ঘটনা ঘটতে পারে। এ ঘটনায় ২ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর এ থেকে বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। নিহত পাঁচজন হলেন- তাসলিমা (৪০), তাসলিমার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার ভাই মোরশেদুল (২৫), তাসলিমার দেবরের স্ত্রী লামিয়া (২৫)।
এ হত্যাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটককৃত দুজন হলেন- তাসলিমার স্বামী শফিকুল ও শফিকুলের ভাই শরিফ।
তাসলিমার মা মোরশেদা বেগম ধানমন্ডিতে থাকেন। তার কাছ থেকে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পেয়েছেন, যা এই হত্যাকাণ্ডের মূলে যেতে সহায়তা করতে পারে।
মোরশেদা বেগম যে তথ্য দিয়েছেন, তা হলো- তাসলিমার সঙ্গে তার স্বামী শফিকুল ইসলামের বিয়ে হয় ১৩ বছর আগে। রাজধানীর কলাবাগান উত্তর ধানমন্ডির পোড়াবাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন শফিকুল। ঋণের বোঝা ছিল তাসলিমার ওপর। ধারদেনায় ডুবে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়ির মালিকের কাছ থেকেও ১ লাখ ধার নিয়েছিলেন তাসলিমা।
মোরশেদা বেগম জানান, তাসলিমার ঋণের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না তারা। কত টাকা ঋণ ছিল, টাকা দিয়ে সে কী করত, তার কিছুই জানতেন না তিনি। তবে যখন পাওনাদারদের সঙ্গে বিবাদ জোরালো হতে থাকে, তখন তিনি এ বিষয়ে জানতে পারেন।
মেয়েকে সমস্যা থেকে উদ্ধারের উদ্যোগ নেন মোরশেদা। কলাবাগানের ওই বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের টাকা শোধ করে দেওয়ার শর্তে তাসলিমাকে গোপনে নারায়ণগঞ্জে তার বোন ইয়াছমিনের বাসায় রেখে দেন। তারপর তাসলিমার জন্য মোরশেদা বেগম একটি বাড়ি ভাড়া করেন। গত মাসে ভাড়া নেওয়া এই বাড়িতে তাসলিমার সঙ্গে তার ভাই ও তাসলিমার দেবর স্ত্রীকে নিয়ে থাকা শুরু করে।
তাসলিমার মা মোরশেদার ধারণা, তাসলিমার ধারদেনার সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র থাকতে পারে। তবে পুলিশ এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কোনো তথ্য পায়নি।