গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী (ক:)’র ওরশ শরীফ সম্পন্ন

0

নিজস্ব প্রতিবেদক : আশেক-ভক্ত-অনুরক্তের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত চট্টগ্রামের মাইজভান্ডার দরবার শরীফ। গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী’র শজরার ধারাবাহিকতায় বর্তমান সাজ্জাদানশীন আলহাজ্ব হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম:) এঁর পরিচালনায় গতকাল শনিবার রাতে আখেরী মোনাজাতে ভক্তবৃন্দের আমিন আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত মাইজভান্ডার দরবার শরীফ।

মাইজভান্ডার দরবার শরীফের আধ্যাত্ম শরাফতের প্রতিষ্ঠাতা, বেলায়তে মোতলাকায়ে আহমদী যুগের প্রবর্তক গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক:) এঁর ওরশ শরীফ প্রতি বছর ১০ মাঘ ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ১১০ তম ওরশ। সাজ্জাদানশীনে দরবারে গাউছুল আজম আলহাজ্ব হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম:) এঁর আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলে অনুষ্ঠিত এই ওরশ শরীফ সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মোন্তাজেমে দরবার আলহাজ্ব সৈয়দ আহমদ হোসাইন মুহাম্মদ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারী (ম:)।

ওরশে আগত আশেক-ভক্তের উদ্দেশ্যে সাজ্জাদানশীন আলহাজ্ব সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম:) বলেন- আমাদের রাসূল (স:) এঁর আদর্শ অনুসরণ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। রাসূল (স:) এঁর সঠিক আদর্শ শিক্ষা দেন অলিগণ। আজ বর্তমান বিশ্ব নূরে মুহাম্মদ সাললাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম এঁর হেদায়তী ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে হানাহানি, মারামারিসহ বিভিন্ন খারাপ কাজে লিপ্ত হচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে আজ মুসলিম সমাজ বিপদগ্রস্থ।

তিনি আরো বলেন- হেদায়তের সর্বোত্তম মঞ্চ খোদায়ী শান্তি নিকেতন হচ্ছে গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীর দরবার। গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী আল্লাহর পক্ষ থেকে মানব জাতির জন্য বড় নেয়াতম। তিনি মাইজভান্ডারী ত্বরিকা প্রবর্তন করে মানুষকে নৈতিক পরিশুদ্ধির সঠিক পথ দেখিয়েছেন। যার ফলে ঐশী প্রেম পিপাসু সাধক ও দোয়া প্রত্যাশী ফরিয়াদীদের ভীড়ে এই আধ্যাত্মিক মহা পুরুষের রওজা শরীফ বিশ্ব মানবতার কল্যাণধারক এক উচ্চমার্গীয় আধ্যাত্মিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে প্রতি বছর এই ওরশ শরীফে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি ভারত, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, সৌদিআরব, সিঙ্গাপুর, আরব আমিরাত, বাহরাইন, ওমান, কাতারসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও পীর মাশায়েখ, আলেম-ওলামা, মুরিদান, ভক্ত, জায়েরীন, পর্যটক ও গবেষকরা (৮-১০ মাঘ) তিন দিন ব্যাপী এ ওরশ শরীফে অংশগ্রহণ করেন। ওরশ শরীফ চলাকালে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ ও আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জিকির, মিলাদ ও ছেমা মাহফিলের ধ্বনিতে পুরো এলাকা মুখরিত ছিল। এছাড়া মাইজভান্ডার দরবার শরীফের আশপাশের এলাকাগুলোতে জমজমাট গ্রাম্য মেলাও গড়ে উঠে।

কর্মসূিচর মধ্যে দিনব্যাপী খতমে কোরআন, খতমে গাউছিয়া, নাতে রাসুল (স:) ও শানে গাউছিয়া পরিবেশন, বিজ্ঞ আলেম ও দারুত তায়ালীম প্রতিনিধির মাধ্যমে কোরআন হাদিসের আলোকে আলোচনা এবং ছেমা মাহফিল করা হয়। এছাড়া জায়েরীনদের প্রতিটি ক্যাম্পে প্রতি ওয়াক্তে জামাত সহকারে নামাজ আদায় এবং ইবাদাত বন্দেগী করার সুব্যবস্থা করা হয়। ১২ টা ১ মিনিটে এ মহান ওরশ শরীফে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ এবং দেশের সার্বিক সুখ সমৃদ্ধি, কল্যাণ ও মুক্তি কামনা করে মহান আল্লাহর দরবারে আখেরী মোনাজাত পরিচালনা করেন সাজ্জাদানশীনে দরবারে গাউছুল আজম আলহাজ্ব হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম:)।

ওরশ শরীফে আগত মেহমানদের সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন এবং মাইজভান্ডার ওরশ শরীফ সুপারভিশন কমিটির বিপুল পরিমান স্বেচ্ছাসেবকসহ মাইজভান্ডারী স্পেশাল ফোর্স (এমএসএফ) দায়িত্ব পালন করেন। পুরো ওরশ শরীফ ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এছাড়া ওরশ শরীফ উপলক্ষে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়

ওরশ শরীফে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আরএইচএল গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দুল হক খান, ইন্টারপোর্ট শিফিং এজেন্ট লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ সোহেল হাসনাত, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক জহিরুল ইসলাম, সৈয়দ ফজলুল কাদের, আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভান্ডারী (শাহ এমদাদাীয়া) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সচিব সৈয়দ আবু তালেব সহ কেন্দ্র, অঙ্গসংগঠন, জেলা, মহনগর, উপজেলা, থানা, শাখা দায়রা, খেদমত কমিটির কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.