শিক্ষকদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস সচিবের

0

সিটিনিউজবিডি : সরকারি কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন।

আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আন্দোলনত কলেজ শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস শিক্ষা সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ আশ্বাস দেন তিনি। বৈঠকে শিক্ষাসচিবের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন বিসিএস শিক্ষক সমিতির সভাপতি নাসরীন বেগম ও মহাসচিব আই কে সলিমুল্লাহ। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ৪৫ মিনিটব্যাপী আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে নাসরীন বেগম সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষাসচিব। সমিতির বৈঠকে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে সদ্য কার্যকর হওয়া অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে ‘বৈষম্য’নিরসনের দাবিতে আজ বুধবার টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন দেশের সব সরকারি কলেজের শিক্ষকেরা। এ অবস্থায় শিক্ষক নেতাদের আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেয় সরকার। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী বুধবার শিক্ষাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন শিক্ষক নেতারা।

কলেজ শিক্ষকদের টানা তিন দিনের এ কর্মবিরতি শেষ হবে বৃহস্পতিবার। দেশের বিভিন্ন সরকারি কলেজ, আলিয়া মাদরাসা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ (টিটি) কলেজ, গভ. কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউট, শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অফিস ও প্রকল্পে কর্মবিরতি চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

দেশে ২৭০টি সরকারি কলেজ, তিনটি আলিয়া মাদ্রাসা, ১৪টি টিটি কলেজ ও ১৬টি কমার্শিয়াল কলেজে বর্তমানে শিক্ষা ক্যাডারের মোট ১৫ হাজার কর্মকর্তা রয়েছেন।

গত ২২ জানুয়ারি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাধারণ সভায় সব সরকারি কলেজে বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে ২৬ থেকে ২৮ জানুয়ারি পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষকদের দাবি না মানা হলে আগামী ৬ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয় শিক্ষক সংগঠন।

এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষাসহ ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এছাড়া ১৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা ও ক্লাস বর্জন করে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করা হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়।

অষ্টম বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর থেকেই অধ্যাপকদের পদমর্যাদা ও বেতনক্রম অবনমনের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। এর অংশ ‍হিসেবে গত ৪ ও ৫ জানুয়ারি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করেন শিক্ষকরা।

অষ্টম বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল রাখা ছাড়াও শিক্ষকদের পদ আপগ্রেড এবং বৈষম্য নিরসনে ‘সুপারনিউমারারি পদ’ সৃষ্টির মাধ্যমে পদোন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা বলছেন, অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পঞ্চম থেকে সরাসরি তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক হতেন। চতুর্থ গ্রেডের অধ্যাপকরা অর্ধেক সিলেকশন গ্রেড পেয়ে তৃতীয় গ্রেড পেতেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড বাতিলের ফলে অধ্যাপকদের চতুর্থ গ্রেড থেকেই অবসরে যেতে হবে। ফলে মর্যাদা ছাড়াও বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।

সরকারের অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো ১ জুলাই থেকেই পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকদের অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে তৃতীয় গ্রেডের বেতন দিতে আদেশ জারির দাবি জানিয়ে আসছে বিসিএস শিক্ষক সমিতি।

এছাড়া নায়েম মহাপরিচালক, এনসিটিবি চেয়ারম্যান, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা সদরের অনার্স ও মাস্টার্স কলেজের অধ্যক্ষের পদকেও গ্রেড-১ এ উন্নীত এবং মাউশি, নায়েম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক; অনার্স/মাস্টার্স কলেজের উপাধ্যক্ষ, শিক্ষা বোর্ডের সচিব এবং এনসিটিবির সদস্যদের পদকে দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীতের দাবি করে আসছে বিসিএস শিক্ষা সমিতি।

অনার্স ও মাস্টার্স রয়েছে এমন বিভাগে দ্বিতীয় গ্রেডের একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি এবং বিকল্প ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখার দাবি রয়েছে তাদের।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.